চলচ্চিত্র এবং রাজনীতি- দুই অঙ্গনেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনার সম্পৃক্ততা। আগামী পরিকল্পনা কী?
মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেক মানুষেরই দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে আমার আন্তরিক প্রচেষ্টা বরাবরই অব্যাহত আছে। বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, ভালোবাসা দিয়ে উভয় ক্ষেত্রে জনগণের মন জয় করেছি। এখনো অনেক কিছু করণীয় রয়ে গেছে। সেটি রাজনীতি বা চলচ্চিত্র যে মাধ্যমেই হোক। তাই মেয়র হিসেবে গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নারীর ক্ষমতায়ন আরও বৃদ্ধি এবং ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। পাশাপাশি নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবারের মধ্যে থাকা নানা অসঙ্গতির চিত্র তুলে ধরে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে চাই।
একাধারে তারকা ও রাজনীতিবিদ আপনি। প্রাপ্তির হিসাবটা কতটা সমৃদ্ধ?
রাজনীতি ও তারকা জীবনের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। রাজনীতি মানে মানুষের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়া। আর তারকারা পরোক্ষভাবে মানুষের জন্য কাজ করেন। তারপরেও মিল অবশ্যই আছে। দুই অঙ্গনের কাজই মানুষের জন্য। দুটি মাধ্যমেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হয়। আমার সৌভাগ্য, সেই আস্থা অর্জনে আমি সক্ষম হয়েছি।
নতুন চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানতে চাই।
নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণে পাণ্ডুলিপি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। চলচ্চিত্রের শিরোনাম- 'এই তুমি সেই তুমি'। দুই প্রজন্মের চিত্র নিয়ে ছবির গল্প দাঁড়িয়েছে। আগের প্রজন্মের জুটি হিসেবে আলমগীর ও আমি থাকছি। এ প্রজন্মের জন্য আরিফিন শুভকে চূড়ান্ত করেছি। তার সঙ্গে জুটি হিসেবে নতুন নায়িকা খুঁজছি। পেলেই শুটিং শুরু করব। গল্প-চিত্রনাট্য আমারই লেখা। আমার আগের নির্মিত 'আয়না'র মতো বা তার চেয়েও বেশি কিছু থাকবে এতে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আগে সেরা অভিনেত্রীর স্বীকৃতি পেয়েছেন, আর এবার আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন, কেমন লাগছে?
আমাদের চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করতে অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে আসছি। এর স্বীকৃতি হিসেবে দর্শকের ভালোবাসা এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়েছি। এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছি। এখন এই ভেবে ভালো লাগছে যে, আমি হয়তো চলচ্চিত্রকে কিছু দিতে পেরেছি। আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। আজীবন চলচ্চিত্রে কাজ করে যেতে চাই। চলচ্চিত্র জগতকে আরও পূর্ণতা দিতে চাই।
আমাদের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন?
দেশীয় চলচ্চিত্রে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। এফডিসি প্রায় আধুনিক যন্ত্রপাতিশূন্য। নতুন কিছু এলেও চলচ্চিত্র নির্মাণে তা যথেষ্ট নয়। তা ছাড়া টেকনিশিয়ান ও মেধারও অভাব আছে। এভাবে একটি শিল্প চলতে পারে না। চলচ্চিত্রবিষয়ক ইনস্টিটিউশনও নেই। যারা কাজ করছেন তারা কাজ করতে করতে আর দেখতে দেখতে শিখেছেন। এতে দেশের সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম চলচ্চিত্র শিল্প প্রায় স্থবির হয়ে আছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।
চলচ্চিত্রকে ঘিরে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?
চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে এই মাধ্যমটি নিয়ে সবসময়ই আমাকে ভাবতে হয়। এ মাধ্যমের কৌলিণ্য পুনরুদ্ধারে সরকারের সহযোগিতা প্রথমেই দরকার। সরকার চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করেছে। শিল্পের সুযোগ-সুবিধা যেন পূর্ণমাত্রায় নিশ্চিত করা হয় তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। তা ছাড়া প্রেক্ষাগৃহ, ফিল্ম আর্কাইভ, ফিল্মসিটিসহ চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের উন্নয়ন হওয়া দরকার। আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আলাউদ্দীন মাজিদ