সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উপমহাদেশের কিংবদন্তি বাঙালি অভিনেতা। বেশ কিছু দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে রবিবার দুপুরের তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর আগে করোনার সময়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মানসিকভাবে ভালো ছিলেন না বলে জানা গেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য এই তথ্য জানিয়েছেন।
এক সময় ‘আনন্দবাজারের’ সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ করা গৌতম এখন আছেন ‘সংবাদ প্রতিদিনে’। সৌমিত্রের জীবদ্দশায় একাধিক আলোচিত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। পেশাদারিত্বের বাইরে অভিনেতার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার।
সোমবার সংবাদ প্রতিদিনে ‘শেষ লোকেশনে মিশে গেলেন উত্তমদার সঙ্গে’ শিরোনামের স্মরণিকায় গৌতম লিখেছেন, ‘একটা ব্যাপারে কোনও দ্বিমত নেই যে, করোনাভাইরাসের চক্করে শিল্পীদের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রচণ্ড মনোকষ্টে ছিলেন সৌমিত্র। মাসিক মোটা টাকা এসেই যেত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি বা ফিতে কাটায়। কোভিডের বাজারে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়।’
‘একদিন ফোন করে বলি এমনিতে তো আপনার রেস্ট হয় না। এখন অন্তত সেই সময়টা পাচ্ছেন,’ এটা শুনে গৌতমকে চরিত্রবিরোধী রুক্ষ জবাব দেন অভিনেতা, ‘কে চেয়েছে এমন রেস্ট। ছয় মাস ধরে একটা রোজগারপাতি নেই। কিছু নেই।’
গত কয়েক মাস শুটিং বন্ধ ছিল পশ্চিমবঙ্গে। এরপর কাজ শুরু হলেও অনেকে বাড়িতেই থাকেন। কেউ কেউ আবার নেমেও পড়েন। এক সময় উত্তর কুমারের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সৌমিত্রও তাদের মধ্যে ছিলেন। কাজ করছিলেন তার ওপর তৈরি একটি তথ্যচিত্রে। এর মধ্যেই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন!
ভারতের খেলাধুলা এবং বিনোদন জগতের সাংবাদিকতায় রীতিমতো কিংবদন্তির পর্যায়ে চলে যাওয়া গৌতম লিখেছেন, ‘দেশের অনেক কমবয়সী অভিনেতা যেমন অর্থনৈতিকভাবে বাড়তি শক্তিশালী হওয়ায় এই সময়ের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে স্টুডিওমুখো হননি, সাড়ে পঁচাশি বছরের গল্ফগ্রিন-আবাসিক (সৌমিত্র) সেটা পারলেন কোথায়? সংসার জীবনের ডুবন্ত অর্থনৈতিক ডিঙি সামাল দিতে গিয়ে তার এত বেপরোয়া হওয়ার কি সত্যি দরকার ছিল?’
বিডি প্রতিদিন/কালাম