সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পাবনায় মহাসড়ক অবরোধ, রংপুরে মানববন্ধন এবং ফরিদপুরে অবস্থান কর্মসূচি পালন হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসে অসন্তোষ প্রকাশ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয়রা। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা এলাকায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে সড়কের দুই পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। স্থানীয়রা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর, চান্দুরা ও বুধন্তী ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে প্রথমে খসড়া তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। এ নিয়ে কমিশনের শুনানিতে বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও এনসিপি নেতা মো. আতাউল্লাহর গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত গেজেটে হরষপুর ইউনিয়ন আগের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে রাখা হলেও চান্দুরা ও বুধন্তী ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজয়নগরবাসী।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে তিতাস পূর্বাঞ্চলের ১০টি ইউনিয়ন উন্নয়নে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এবার উপজেলাকে দ্বিখন্ডিত করার মাধ্যমে আরও অবহেলার শিকার করা হচ্ছে। তারা বলেন, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন থেকেও বঞ্চিত হবেন চান্দুরা ও বুধন্তীর মানুষ। তাই তারা দ্রুত ইউনিয়ন দুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে পুনর্বহালের দাবি জানান।
বিজয়নগর সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন বলেন, বিজয়নগরকে ছোট করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা অখন্ড বিজয়নগর চাই। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অবরোধ কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
রংপুর : রংপুর সংসদীয় আসনের সীমান নির্ধারণ নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন সিটি করপোরেশনের মানুষ। করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডকে গঙ্গাচড়ায় স্থানান্তরের প্রতিবাদে গতকাল মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সকালে রংপুর কাচারি বাজারে ডিসি অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পরে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন বরাবরও আরেকটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম দেওয়ানী, নূর হাবীব স্বপন, নুরুন্নবী মিয়া, আবদুর রহিম বাবলু, মাইদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান নোমান, সংসদীয় আসন রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব আলমগীর কবির শাহীন এবং আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান মাসুমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের মানুষ।
আসন রক্ষা কমিটির নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ৯ নম্বর ওয়ার্ড রংপুর সদর-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। হঠাৎ করে গঙ্গাচড়া-১ আসনে স্থানান্তর করা জনগণের সঙ্গে চরম অবিচার। তারা আরও জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে।