বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে চর মিঠুয়া গ্রামে তেঁতুলিয়া নদীতে ডুবে যাওয়া এমভি মোস্তাবি নামের কার্গোটি ৩৩ বছর পর উত্তোলন করা হয়েছে। ৬৫ ফুট মাটি কেটে কার্গোটি উত্তোলন করা হয়।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কার্গোটি কেটে কেটে উত্তোলন করা হয়েছে। ইঞ্জিনটি অক্ষত অবস্থায়ই ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এক যুগ চেষ্টার পর কার্গোটি উত্তোলন করা সম্ভব হলো। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা মো. মাহেব জানান, ১৯৯২ সালে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ক্যাবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নিয়ে এমভি মোস্তাবি কার্গোটি চট্টগ্রাম থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। চর মিঠুয়া এলাকায় পৌঁছুলে একটি তেলবাহী কার্গোর সঙ্গে এটির ধাক্কা লাগে। এতে কার্গোটির তলা ফেটে যায় এবং পরে ডুবে যায়। কার্গোতে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেসে চলে যায়। জানা গেছে, ডুবে যাওয়া স্থানটি একটি বয়া দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা ছিল। তবে চর পড়ে যাওয়ায় মাটির গভীরে চাপা পড়ে যায় কার্গোটি। এরপর আশপাশে বাড়িঘর গড়ে ওঠে। ডুবে যাওয়া স্থানে ধান আবাদ করা হয়। তার পরেও একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্গোটি মাটির গভীর থেকে উত্তোলনের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় ৩৩ বছর পর খুলনার মেসার্স অগ্রণী ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট এটি উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কার্গোটির দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট, প্রস্থ ১৪ ফুট এবং উচ্চতা ছিল ১৭ ফুট। এটি উত্তোলনের জন্য ৫ একর এলাকাজুড়ে ৬৫ ফুট গভীর করতে হয়। মেসার্স অগ্রণী ওয়াটার ট্রান্সপোর্টের মো. ইউসুফ আলী জানান, ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ দরদাতা ২০ লাখ টাকায় কিনে এই উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। উত্তোলনে ৩০ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। ১৫ বছর ধরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা নুর ইসলাম বলেন, কার্গোটি ওঠানোর সময় কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি পাওয়া গেছে। তবে রেকর্ডার, ট্রান্সমিটার, অ্যালমুনিয়াম ও তামার তারের বান্ডেল পাওয়া যায়নি। এখন শুধু বডি ও ইঞ্জিনটি পাওয়া গেছে।
মেহেন্দিগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজুর রহমান বলেন, বিআইডব্লিউটি-এর মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছিল। এরপর কার্গোটি ওঠানো সম্ভব হয়েছে।