ইব্রাহিম খলিল। বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাতাবাড়িয়া গ্রামে। ২৮ বছর ধরে গাছে উঠে মৌচাক কাটেন। সেই মধু বিক্রি করে তার পরিবার চলে। শুধু শীতের সময় মৌচাক কম থাকায় ধানের চাষ করেন। একই উপজেলার বান্দুয়াইন গ্রামের মিজানুর রহমান। তিনিও মৌচাক না থাকলে জমি চাষের ট্রাক্টর চালিয়ে আয় করেন।
এছাড়াও বাতাবাড়িয়া, বান্দুয়াইন, পাশের নাড়িদিয়াসহ আশপাশের গ্রামের ১৫ জন মৌচাক কেটে আয় করেন। কুমিল্লার এমন ১৭ উপজেলায় মৌচাক কাটেন ২ শতাধিক মানুষ। এদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা গেলে আরও পরিচ্ছন্ন পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করা যাবে। অপচয় থেকে রক্ষা পাবে মূল্যবান মধু।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনপাল গ্রামে দেখা যায় মৌচাক কাটার একটি দলকে। তারা গাছওয়ালা বাড়ি দেখে টার্গেট করেন। গাছের দিকে উঁকিঝুঁকি দেন। তাদের চোখ ঠিকই খুঁজে নেয় গাছের মগড়ালের মৌচাক। গাছের নিচ থেকেই বুঝে যান মৌচাক কাটার উপযোগী হয়েছে কিনা। তারপর গাছের মালিকের খোঁজ করেন। মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে তারা গাছে উঠে পড়েন।
বাতাবাড়িয়ার ইব্রাহিম খলিল বলেন, তিনি রাঙামাটিতে কাজ শেখেন। তার থেকে আরও ১৩ জন শেখে। তিনি জানান, তিনি প্রতিদিন ৫টির মতো চাক কাটেন, ফুলের মৌসুমে—১০ টি চাক কাটেন। গড়ে প্রতি চাকে তিন কেজির মতো মধু পান। কখনও
৫ কিংবা ১০ কেজিও পান। অর্ধেক মালিককে দেন, বাকিটা বিক্রি করে দেন।
বান্দুয়াইন গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, কাজ করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। এখন মৌমাছির কামড়ের ভয় কিংবা গাছে চড়ার ঝুঁকি নিয়ে ভাবেন না। ভালো আয় হলে সব কষ্ট ভুলে যান।
বিসিক কুমিল্লার ডিজিএম মুনতাসীর মামুন বলেন, প্রাকৃতিক মধুর চাক কাটা শ্রমিকরা প্রশিক্ষিত নন। তাই তারা সঠিক পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করতে পারেন না। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন। তাদের একত্র করা কঠিন। তারা যদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তবে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/তানিয়া