মানাম আহমেদের ছেলে আত্মহত্যা করেছেন। পুরো ফেসবুকে জুড়ে শোকের ঘন ছায়া। সবার বক্তব্য মোটামুটি এক। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এবং সম্ভাবনাময় একজন শিল্পী অকালে চলে গেলেন।
সত্যি কথা বলতে কি, এই ২৭ বছর বয়সী প্রতিভাবান তরুণটির কথা আমি আগে কখনো শুনিনি এবং এটাই বাংলাদেশ। যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি মারা যাচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি জানতেই পারবেন না যে, আপনি এত বড় প্রতিভা ছিলেন।
ফেসবুকের আহাজারি দেখে মনে হচ্ছে, ছেলেটি এখন অন্য কোনো ভূবণ থেকে এসব স্ট্যাটাস পড়বে। পড়ে আত্মহত্যার ব্যাপারটিকে ডিলিট মেরে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।
ব্যাপারটি এমন নয়। আজ যত মানুষ তাকে নিয়ে লিখছে, তুমুল প্রশংসা করছে, তার শতভাগের এক ভাগ যদি সে বেঁচে থাকা অবস্থায় কেউ লিখতো, আর যাই হোক ছেলেটি আত্মহত্যা করতো না।
আমাদের ভালোবাসা বড় অদ্ভুত। হারিয়ে যাবার পর সেই ভালোবাসা জেগে ওঠে। কিন্তু যখন মানুষটি পাশে থাকে, তখন ভালোবাসা থাকে না। একমাত্র চলে গেলেই ভালোবাসা জেগে ওঠে। বাঙালির মতো এই রকম বিরহপ্রিয় জাতি আর একটিও নেই!
Ashif Entaz Rabiর স্ট্যাটাসটা হুবহু কপি করে শেষ করছি অামার ভাবনা দিয়ে।
আমার মনে হয় সবসময় সাফল্যের পেছনে দৌড়ানো আজকের প্রজন্মের ছেলেমেয়েগুলে ভীষন একা। তারা জীবন উপভোগ করতে জানে না। বাস্তব জীবন বা ফেসবুকে লাখো বন্ধুর সাথে থেকেও তাই তারা একেক জন এতোটাই একা যে প্রচণ্ড কষ্টের মুহুর্ত শেয়ার করার জন্যও কাউকে পায় না। আমার কাছে মনে হয় সবসময় সাফল্য বা জীবনের পেছনে না ছুটে মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে বিশ্রাম নিয়ে জীবনটা উপভোগ করা উচিত। কারণ জীবনের মর্ম না বুঝলে বাকি সব কিছুই বৃথা। কাজেই চলুন আমরা আগে আমাদের জীবন বুঝি। মানুষ বুঝি। পরের জন্য বাঁচার, পরের জন্য কিছু করায় স্বার্থকতা খুঁজি। দেখবেন জীবনটা অর্থবহ মনে হবে।
লেখক : হেড অব প্রোগ্রাম, মাইগ্রেশন ব্র্যাক।
(শরীফুল হাসানের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)