১৯৭৭ সালে SSC পাশ করার পর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করি। যদিও শিশু কাল থেকে অর্থাৎ ১৯৬৮- ১৯৬৯ সাল থেকেই মিছিলে যোগ দেয়া শুরু করেছি। ৭০ এর নির্বাচন স্পষ্ট মনে আছে। অনেক কিছু দেখেছি, কাছ থেকে, দূর থেকে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও অনেক উজ্জ্বল। জাসদ, মিজান আওয়ামী লীগ, রাজ্জাক বাকশাল, গনফোরাম ইত্যাদির কার্যকলাপও দেখেছি মাঠে থেকে। জীবন বাজি রেখে তারাসহ জিয়া- এরশাদ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। শরীরে এখনো ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছি। ৮১ সালে আপা ফিরার পর থেকে কত বিরোধিতা দেখলাম। ১/১১'তে দেখলাম আপাকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াশ। সব সময় সবাই বিরুদ্ধে গেলেও ছাত্রলীগ ছিল বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড। ১৯৮১ এর পর কাদের ভাই সব সময় ছিলেন আপার পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের অভিভাবক।
আপার সমালোচনা করে, ১/১১'র সময় আপার বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দিয়ে, আপাকে রাজনীতি থেকে বিতারণের জন্য সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে, ড. ইউনুস, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর দলে যোগ দিয়ে আপাকে নিশ্চিহ্ন করার প্রচেষ্টা করে, ড. কামাল গংয়ের দলে যোগ দিয়ে ১৯৯১ থেকে আপাকে ধংশ করার চেষ্টা করে, নেত্রীকে বাক্সবন্ধী করে বিদেশে export করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে অনেকেই শুধু আজ আওয়ামী লীগই করছে না, বর্তমানে MP, Minister, Mayor হয়ে এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ভোগ বিলাশ করছেন। আর জামায়াত শিবির প্রশ্নে অর্থাৎ চট্টগ্রামের এক অখ্যাত রাজাকার কন্যার আওয়ামী লীগের অংগসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসার বিষয় ফেসবুকে শেয়ার করে ছাত্রলীগের ৫ জন নেতা বহিষ্কার হয়েছে শুনে হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছে। কিন্তু একই বিষয় শেয়ার করে রাজাকার কন্যা বহাল তবিয়তে আছে। স্বপদে, স্বদর্পে। আমি ব্যথিত, আমি ক্ষুব্ধ। আমি আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ ২ টাকার সদস্য। কোন পদে নাই। আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি এ বহিষ্কারাদেশের, যদি এ বহিষ্কার হয় আমার জানা মতে রাজাকার কন্যার বিষয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে।
আমাদের ছাত্র রাজনীতির অভিভাবক কাদের ভাইকে অনুরোধ করব বিষয়টির প্রতি সদয় দৃষ্টি দিতে। আর এই প্রতিবাদের জন্য আমাকে ২ টাকার সদস্যপদ থেকেও যদি বহিষ্কার করা হয় আপত্তি নাই। বঙ্গবন্ধু এবং নেত্রীর কর্মী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে কোন পদ-পদবির দরকার হয় না। মুজিবভক্ত লক্ষ-কোটি মানুষ ১৯৭৫ এর পর থেকে কোন পদ-পদবি ছাড়াই যুদ্ধ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। আর ছাত্রলীগ সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাবে এ বিশ্বাস আমার আজীবন থাকবে। জয় বাংলা।
(লেখকের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)
বিডি-প্রতিদিন/০২ আগস্ট, ২০১৭/মাহবুব