১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:২৬

অপরূপ সাজে শাপলার বিল

রাহাত খান, বরিশাল

অপরূপ সাজে শাপলার বিল

প্রকৃতি অপরূপ রূপে সেজেছে বরিশালের উজিরপুরের শাপলার বিল। যতদূর চোখ যায়- রক্তিম আভার হাতছানি। বিলের পানিতে মাথা উঁচু করে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। মাঝে মাঝে দেখা যায় সাদা আর বেগুনী শাপলা ফুল। বর্র্ষার এই সময়ে পর্যটকদের ভিড় হয় বিলে। শুক্র-শনিসহ সরকারি ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তারা পরিবার-বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে বিলে নৌকায় বেড়িয়ে আনন্দ করেন। পর্যটকদের আনাগোনায় শাপলার মৌসুমে স্থানীয় অর্থনীতি হয় চাঙ্গা। 

বরিশাল সদর থেকে সড়ক পথে উজিরপুরের শাপলার বিলের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। কালভিলা, মুড়িবাড়ি, জনতা বাজার এবং পূর্ব সাতলার বিস্তীর্ণ ৪টি বিলে বর্ষার শুরুতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় অসংখ্য শাপলা। আগাছায়ও ভরে থাকে বিল। শ্রাবণের শেষের দিকে শাপলায় ফুল ফুটতে শুরু করে। কার্তিক মাসের শেষে দিকে বিলে পানি থাকতে থাকতেই শাপলাসহ যাবতীয় আগাছা পরিস্কার করেন স্থানীয় কৃষকরা। অগ্রহায়নে শুকিয়ে যায় বিল। শাপলা ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ৩ মাস পর্যটকদের ঢল নামে বিলে। সরকারি ছুটি কিংবা বিশেষ কোন উৎসবে ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সূর্য প্রখর হওয়ার পর আস্তে আস্তে বুঝে যায় শাপলা, ফোঁটে আবার রাতের বেলা। এমন ঘটনার সাক্ষী হতে পর্যটকরাও ছুটে যান রাতের আঁধার কাটিয়ে। 

তারা নৌকায় বিলের পানিতে ভেসে শাপলা ফুলের সাথে মিতালী করেন। মিশে যান প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য। কেউ সেলফি তোলেন, কেউ শাপলা ফুল মাথায় পেঁচিয়ে নিজেকে প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে ফেলেন। গান বাজিয়েও নৌকায় বিলে ঘুরে আনন্দ করেন পর্যটকরা। 

পর্যটকদের আনাগোনায় বর্ষার ৩ মাস চাঙ্গা থাকে স্থানীয় অর্থনীতি। দর্শনার্থীদের নিয়ে নৌকায় দুই ৩ ঘণ্টা বিলে ঘুরিয়েই ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে আয় করছেন স্থানীয়রা। পর্যটকদের ঘিরে স্থানীয় খাবার হোটেলসহ অন্যান্য দোকানগুলোতেও বেড়ে যায় বেচা-কেনা। বেড়াতে গিয়ে স্থানীয় নদী-খাল-বিলের দেশীয় প্রজাতির নানা মাছ কিনে নেন পর্যটকরা। 

শাপলার বিলে যেতে বিড়ম্বনাও আছে পর্যটকদের। বরিশাল নগরী থেকে মহাসড়ক ধরে উজিরপুর সদর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার যাওয়ার পর বাকি প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের বেশিরভাগই খানাখন্দে ভরা। এতে দুর্ভোগে পড়েন পর্যটকরা। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের জন্য সব মহলের দাবি থাকলেও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ নির্বিকার। 

বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ জামাল উদ্দিন বলেন, উজিরপুর থেকে সাতলা পর্যন্ত সড়কের ৫ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। বাকি সড়কের খানাখন্দ এলজিইডি’র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেরামত করা হবে। শাপলার বিলে পর্যটকদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি প্রায় ২৪ ফিট প্রশস্ত করার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া আছে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর