১৩ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৩৬

ঝিনাইদহে গৃহিণীরা কুমড়াবড়ি তৈরিতে ব্যস্ত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে গৃহিণীরা কুমড়াবড়ি তৈরিতে ব্যস্ত

শীতকে বরণ করে ঝিনাইদহে গৃহিণীরা কুমড়া ও কালাই ডাল মিশ্রিত বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শহর ও গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে কালাই আর চালকুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরির কাজ। গৃহিণীরা কুমড়া বড়ি তৈরি জীবিকা নির্বাহ করছেন।

গ্রামের প্রায় বাড়ির চালে ও মাচাই শোভা পাচ্ছে বড় বড় চাল কুমড়া, যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কুমড়াবড়ি। কেউ কাজ করছে ঢেঁকি দিয়ে, কেউবা সাহায্য নিচ্ছেন শিলপাটার। অনেকে সাহায্য নিচ্ছেন বৈদ্যুতিক মেশিনের। শীতের সকালে পাড়া-মহল্লার গৃহিণীরা বাড়ির ছাদে একত্রে দল বেঁধে, আর কেউ কেউ মাটিতে মাদুর বিছিয়ে বড়ি তৈরির কাজ করছেন।

বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত কালাইয়ের ডালের সাথে চাল কুমড়ার পরিবর্তে অনেকে মুলা, পেঁপে ও পেঁয়াজ ব্যবহার করে থাকেন। শীত এলেই গ্রামাঞ্চলের লোকজন বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মূলত শীতের মৌসুমে কুমড়া বড়ির বাজার ধরতে আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ এই তিন মাস কুমড়াবড়ি তৈরি করা হয়। ২-৩ দিন কড়া রোদে শুকিয়ে প্রস্তত করা হয় সুস্বাদু এই বড়ি। 

এ ব্যাপারে শৈলকূপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের রোজিনা বেগম বলেন, শীতে বড়ি ছাড়া তরকারি রান্না অপূর্ণ থেকে যায়, বড়ি প্রতিটি তরকারিতে বাড়তি স্বাদ এনে দেয়। এছাড়াও বড়ি দিয়ে রান্না করা বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলুর তরকারির স্বাদই আলাদা। তাই শীতের আগমনে আমরা বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।

গাড়াখোলা গ্রামের ওয়াহিদ হাসান জানান, ৩০ বছর যাবত এই কাজের সাথে জড়িত। মেশিনে কুমড়াবড়ি তৈরি করি। ডাল ও মসলার দাম বেড়ে যাওয়ায় কুমড়াবড়ি তৈরিতে খরচ বেশি পড়ছে ফলে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন আমার মেশিনে ৩০০ কেজি বড়ি তৈরি হয়। আর প্রতিদিন ৩০ জন মহিলা শ্রমিক সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কাজ করে আর এদের প্রত্যেককে ৬০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। সাধারণত পাইকারি ১৬০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হয়।

গাড়া খোলা চরের বড়ি শ্রমিক ববিতা বেগম জানান, আমরা মেশিনে বড়ি তৈরির কাজ করি। প্রতিদিন কাজ করা বাবদ ৬০/৭০ টাকা করে মালিকের কাছ থেকে পাই। হাটবাজারে প্রতি কেজি কুমড়াবড়ি ১৩০/১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকে। আর অনেকে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কিনে নিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। 

এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছে শৈলকুপার গৃহিণীরা ও বড়ি মহিলা শ্রমিকরা। তবে প্রশাসনের সাহায্য পেলে এই খাতকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর