মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ, তদন্তে ডিবি

নাটোর প্রতিনিধি

ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ, তদন্তে ডিবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে খ্রিস্টান ব্যবসায়ী সুনীল দানিয়েল গমেজকে হত্যার ২৪ ঘণ্টা পরও পুলিশ কোনো ক্লু বের করতে পারেনি। কারা কী উদ্দেশ্যে তাকে খুন করেছে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। তবে আইএস দায় স্বীকার করলেও একাধিক বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত চলছে বলে গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় রবিবার রাতে অজ্ঞাত আসামিদের নামে বড়াইগ্রাম থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের মেয়ে স্বপ্না গমেজ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে, রবিবার   রাতেই ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সকালে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নাটোর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আবুল কালাম আজাদ ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের জানান, তার ডান ঘাড়ে ভারী ও ধারালো অস্ত্রের কোপ দেওয়া হয়েছে। এতে ঘাড় থেকে কেটে কান অবধি গিয়ে পৌঁছেছে। ময়নাতদন্তে বলা হয়েছে— অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টায় বনপাড়া মিশন কবরস্থানে নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে। এ সময় রাজশাহী ধর্ম প্রদেশের চার্চ বিশপ জেভার্স রোজারিও, ফাদার পেট্রিক গমেজ, নিহতের ভাই রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলার খালিসা মিশনের ফাদার প্রশান্ত গমেজ, বনপাড়া প্যারিস কাউন্সিলের সভাপতি ফাদার বিকাশ হিউবার্ট রিবেরু, সহসভাপতি বেনেডিক্ট গমেজসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক বাসার ভাড়াটিয়া লালপুরের কদিমচিলান গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার আব্দুল্লাহ আল মামুন সবুজকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির ওসি আবদুল হাই বলেন, এখনো কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তবে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে হত্যার সম্ভাব্য কারণ ও দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। রাজশাহী ধর্ম প্রদেশের আর্চ বিশপ ফাদার জেভার্স রোজারিও সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সুনীল হত্যার পর আইএসের দায় স্বীকারের বিষয়টি যদি সত্যি হয় তাহলে তা দুঃখজনক। তিনি বলেন, দেশে বিচারহীনতার কারণেই মসজিদের ইমাম, গির্জার পুরোহিত, হিন্দুদের ধর্মীয় গুরু কেউ হত্যাকাণ্ড থেকে বাদ যাচ্ছেন না। তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। এদিকে, সুনীল গমেজ হত্যার মূল ঘটনা উদঘাটনসহ দোষীদের আটক করে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য সাতদিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয় খ্রিস্টান সমাজের নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় আগামী রবিবার মিশনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে সব জাতি-ধর্মের লোকজনকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিকালে নিহতের লাশ দাফন পূর্ব সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে ১২টার দিকে বনপাড়া মা মারিয়া মিশনের পশ্চিম পাশে বাড়িসংলগ্ন মুদি দোকানে সুনীল গমেজকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃৃত্তরা। ঘটনার ৫ ঘণ্টা পর জঙ্গি সংগঠন আইএস এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

 

সর্বশেষ খবর