মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

তিন খুন নিয়ে রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরখানের ময়নারটেকের একটি বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া তিন লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এই তিন লাশের মধ্যে ছেলেকে গলা কেটে এবং মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে এসব জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, তিন লাশের ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে। এদিকে পুলিশ বলছে, ওই বাসা থেকে ১৬টি আলামত সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে দা, চাকু, পয়জনিক বোতল, দুটি চিরকুট, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ রয়েছে। এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার জগন্নাথপুরের একই পরিবারের মা, মেয়ে ও ছেলে মাত্র আট দিনের মাথায় লাশ হন। নিহত মায়ের নাম জাহানারা। তার স্বামীর নাম মৃত ইকবাল হোসেন। জাহানারার ছেলে মুহিব সম্প্রতি শেষ হওয়া ৪০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। মেয়ে মীম ছিলেন মানসিক প্রতিবন্ধী। জাহানারার স্বামী ইকবাল হোসেন পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন অফিসের শাখা ম্যানেজার ছিলেন। তিনি ২০১৬ সালে চাকরিরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ওই সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ইকবালের মৃত্যুর পর জাহানারা পরিবার নিয়ে ভৈরব হয়ে ঢাকার কাফরুল এবং সর্বশেষ উত্তরখানে থাকতেন। জাহানারার দেবরের স্ত্রী তানজিনা আক্তার জানান, ঢাকায় বাড়ি করার উদ্দেশ্যেই তারা সেখানে গিয়েছিলেন। তবে কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা বলতে পারছেন না। মুহিব চাকরির চেষ্টা করছিলেন। মেয়েটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রায়ই সবার অগোচরে বিভিন্ন স্থানে চলে যেতেন। এ নিয়ে পরিবারটি দুশ্চিন্তায় ছিল। নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, ইকবালের সম্পত্তি নিয়ে তার ভাইদের সঙ্গে বিরোধ থাকায় তারা বাড়িতে থাকতেন না। সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা করতে ঈদের পর বাড়িতে সালিসি বৈঠক বসার কথা ছিল। প্রতিবন্ধী মেয়ের চিকিৎসা ও ঢাকার উত্তরখানে তাদের মালিকানাধীন একটি খালি জায়গায় বাড়ি করতে ৪ মে তারা ঢাকায় গিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন। পুলিশের উত্তরা বিভাগের এডিসি এ এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে এটি আত্মহত্যা বলে আমরা ধারণা করছি। হতাশা থেকে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।’ এর আগে রবিবার রাতে রাজধানীর উত্তরখানের ময়নারটেক এলাকার একটি বাসা থেকে জাহানারা খাতুন মুক্তা (৪৭) এবং তার ছেলে মুহিব হাসান রশি (২৮) ও প্রতিবন্ধী মেয়ে তাসফিয়া সুলতানা মিমের (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর