শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
বরিশালে বিএনপির সমাবেশ

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। সরকারকে বলব, কালবিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন। তাকে যদি মুক্তি না দেন আপনাদেরও রক্ষা হবে না। বেগম জিয়ার মুক্তি না দিলে অবিলম্বে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বরিশালের হেমায়েতউদ্দিন ঈদগাহ মাঠে এক সমাবেশে বিএনপি নেতারা এ হুঁশিয়ারি দেন। এতে মহানগরসহ ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার প্রতিকৃতি সংবলিত প্লাকার্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে ঈদমাঠে প্রবেশ করে। কর্মীরা মুহুর্মুহু ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ ‘আর কোনো দাবি নাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ ইত্যাদি  স্লোগান দেয়। সর্বশেষ গত বছরের ৭ এপ্রিল এই মাঠেই খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপি সমাবেশ করেছিল।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের সভাপতিত্বে এবং জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া ও আবুল কালাম শাহীনের পরিচালনায় সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, এবিএম  মোশাররফ হোসেন, আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নু, হাফিজ ইব্রাহিম, মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ, আবুল হোসেন খান, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, হাসান মামুন, হায়দার আলী লেনিন, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নুরুল ইসলাম নয়ন, মোস্তাফিজুর রহমান, এলিজা জামান, বরিশালের এবায়দুল হক চাঁন, ভোলার  গোলাম নবী আলমগীর, ঝালকাঠির মোস্তফা কামাল মন্টু, পটুয়াখালীর অহিদ সারোয়ার কালাম, পিরোজপুরের আলমগীর  হোসেন, বরগুনার নুরুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকার গণতন্ত্র হত্যাকারী স্বৈরাচার এরশাদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়েছে। আমরা এরশাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছি, একটা রাজনৈতিক দলের সভাপতির মৃত্যুতে আমরা শোক প্রকাশ করেছি। কিন্তু এটা সত্য, এরশাদ সরকারের আমলেই এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। তার সরকারের আমলেই আমাদের বহু মানুষ, ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে। জনগণের উত্থাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে সরানো হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে আপস করে, তাদের সঙ্গে জোট করে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে অবস্থান নিয়েছে। আজকে তাকে (এরশাদ) রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়। আর যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন, ১৯৭১ সালে পাক সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী থাকলেন তাকে আজকে কারাগারের অন্ধকারে অন্তরীণ করে রাখা হয়।’

বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এদেশের মানুষ আমরা কখনো পরাজয় স্বীকার করিনি। আমরা আমাদের সব দাবি আদায় করেছি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এখনো আমাদের অধিকার আমাদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের অধিকার অন্য কেউ কি রক্ষা করে দেবে? আমাদের বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন কি অন্য  কেউ করবে? আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে  দেশে ফিরিয়ে আনার আন্দোলন কি অন্য কেউ করবে? বিচার বিভাগের স্বাধীনতার আন্দোলন কি অন্য কেউ করবে? আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, জনগণের কথা শুনুন, দেয়ালের লিখন পড়ুন, তাদের ভাষা যেসব উচ্চারিত হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। জনগণের কথা বুঝতে চেষ্টা করুন, বিরোধী দলগুলোকে ডেকে আলোচনা করে একটা রাস্তা বের করুন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।’

সর্বশেষ খবর