মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি

খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে সোচ্চার হতে হবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে সোচ্চার হতে হবে : ফখরুল

বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (র‌্যালি) করেন নেতা-কর্মীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (র‌্যালি) করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গতকাল বেলা ৩টার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ র‌্যালি বের করা হয়। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা’য় রাজপথের আন্দোলনে সোচ্চার হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, তারেক রহমানকে যদি দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই- তাহলে আমাদের অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। রাজপথে এসে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আমরা কি রাজি আছি?’ এ সময় নেতা-কর্মীরা ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অবশ্যই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের চেয়ারপারসনকে মুক্ত করব। গণতন্ত্রকে মুক্ত করব। বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল দল, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবে এবং বেগম জিয়াকে মুক্ত করবে।’ র‌্যালি উপলক্ষে নয়াপল্টনসহ শান্তিনগর পর্যন্ত ব্যাপক পুলিশ ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মোতায়েন করা হয়। শোভাযাত্রার অগ্রভাবে পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা ছিল। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। র‌্যালি উপলক্ষে দুপুর থেকে নয়াপল্টনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। র‌্যালি শুরু হওয়ার পর এক ঘণ্টা নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মালিবাগ, বেইলি রোড, কাকরাইল, বিজয়নগরসহ আশপাশের সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। ৩টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে এই  শোভাযাত্রা নাইটিঙ্গেল মোড় দিয়ে শান্তিনগরে এসে শেষ হয়। দলীয় ও জাতীয় পতাকা, রং-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন, জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি সংবলিত ছবিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। র‌্যালিতে ট্রাকে মশারি টাঙিয়ে মহানগর দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা এডিস মশা প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিষয়টিও তুলে ধরেন। বিএনপির র‌্যালি দেখতে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়ানো পথচারীদের করতালি দিতে দেখা যায়। ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণ, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত গোটা সড়ক জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ‘শুভ শুভ শুভদিন বিএনপির জন্মদিন’ ‘এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে’ ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকা।

র‌্যালির সম্মুখভাগ যখন নাইটিঙ্গেল মোড়ে তখন মিছিলের শেষ ভাগ ছিল ফকিরাপুল বাজার পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকেই পুরো নয়াপল্টন সড়ক ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি শুরু হয়। বেলা ৩টায় পল্টন এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। র‌্যালি শুরুর আগে ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের নেত্রীকে কারাগারে রেখে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। আজকে সরকারের সব খেলা শেষ। তারা আমাদেরকে দুর্বল করতে চেয়েছিল, আমরা দুর্বল নই, আগের থেকে আরও শক্তিশালী দল।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই সরকার আর আমাদের স্তব্ধ করে রাখতে পারবে না। অনেকে প্রশ্ন করেন দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন কখন শুরু হবে? আমি বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এই আন্দোলন আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকারের পতন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। আসুন, আমরা সরকার পতন আন্দোলনের দিকে যাই। এই সরকার জনগণের নয়, এদের কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের সরকার পরিচালনা করার।’ দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য দেন। র‌্যালিতে অন্যদের মধ্যে বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু,  মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুল হাই, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শামা ওবায়েদ, মাহবুবুর রহমান শামীম, বিলকিস ইসলাম শিরিন, মীর সরফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর  নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল,  নাজিম উদ্দিন আলম, সেলিম রেজা হাবিব, নবীউল্লাহ নবী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আফরোজা আব্বাস, জেবা খান, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর