শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

হেফাজত ইস্যুতে ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্তায় মামলা আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

হেফাজতে ইসলামের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানকে হেনস্তার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আফজাল খান নিজে বাদী হয়ে গতকাল ধর্মপাশা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম (৬৫) ও তার ছেলে আল মুজাহিদসহ (২৫) ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আবুল হাশেমকে আটকের পর ছাত্রলীগ নেতার দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত অপর আসামি রফিককেও (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্মপাশা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতিকুর রহমান জানান, মামলায় দুজনকে গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে আল মুজাহিদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক আফজাল খান (২৪) হেনস্তার শিকার হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার মহেশপুর গ্রামে। আরও অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশ এনে হাতকড়া পরিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন মামলার আসমিরা। এই ঘটনায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয় ধর্মপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমকে। এতে ধর্মপাশা থানার ওসি, এক উপ-সহকারী পরিদর্শক ও একজন উপ-পরিদর্শককে প্রত্যাহার করা হয়। ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খান জানান, গত ২৯ মার্চ ‘হেফাজতের আন্দোলন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। মঙ্গলবার বিকালে তিনি জয়শ্রীবাজারে গেলে মুজাহিদ এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে এমন পোস্ট দেওয়ার কৈফিয়ত চায়। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। তিনি আরও জানান, আটক থাকা অবস্থায় ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাদের বিষয়টি জানালে তারা স্থানীয় পুলিশকে জানায়। অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনায়েত পুলিশকে চাপ দিলে তাকে হাতকড়া পরিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে হাতকড়া পরা অবস্থায় তাকে নিয়ে থানার উদ্দেশে যাওয়ার পথে হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। থানায় যাওয়ার পর লিখিত বিবৃতিতে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে আল মুজাহিদ বলেন, তার ফেসবুকের পোস্ট নিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রাণে বাঁচাতে তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে রাখা হয়। পুলিশের উপস্থিতে সে ক্ষমা চাইলে মানুষের উত্তেজনা প্রশমিত হয়। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর