শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

কোথায় গেল স্বাস্থ্যবিধি

মানছে না গণপরিবহন, তীব্র যানজট, ঈদবাজার ফুটপাথ সড়ক সবখানে ভিড়, নেই সচেতনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোথায় গেল স্বাস্থ্যবিধি

যেন স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রতিযোগিতা। রাজধানীর গুলিস্তান থেকে গতকাল তোলা ছবি -রোহেত রাজীব

স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে গণপরিবহন। আগের মতোই ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠছেন যাত্রীরা। কারও মুখে মাস্ক আছে, কারও নেই। যাত্রী ওঠানোর সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এ ছাড়া কিছু বাসে দুই সিটে একজন যাত্রী বসানো হলেও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আবার কোনো বাসে সিট খালি রাখা হচ্ছে না। দাঁড়িয়েও যাচ্ছেন লোকজন। সকালের দিকে বাসগুলোয় কিছু সিট ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার পর রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসগুলোয় যাত্রীরা দাঁড়িয়েও ছিলেন। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গণপরিবহনে চিরাচরিত এ চিত্রই দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গতকাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মহানগর ও জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই গণপরিবহনে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে গতকাল রাজধানীর গাবতলীতে বেশ কিছু বাসকে জরিমানা করতেও দেখা গেছে। সেই সঙ্গে গণপরিবহন চলাচল শুরুর প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। করোনা মহামারীতে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কিন্তু মানুষ কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ঈদের কেনাকাটায় ভিড় করছেন রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে। অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ঈদের বাজার করতে আসা অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। আবার কেউ মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে থুতনিতে লাগিয়ে রেখেছেন; কেউবা একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার কথা বলে খুলে রেখেছেন। ঈদ মার্কেটে শারীরিক দূরত্বের বালাই নেই। কেনাকাটা করতে অনেকে নারী-শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভিড় করছেন মার্কেটে। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানকার দোকানগুলোয় উপচে পড়া ভিড়। অনেকটা ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা। এ ছাড়া ওই এলাকার রাস্তাগুলোয়ও তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল জেলার অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে গণপরিবহন চলাচল। তবে বন্ধ থাকছে আন্তজেলা গণপরিবহন। সেই সঙ্গে আগের মতো ট্রেন ও লঞ্চ বন্ধ রয়েছে।

রাজধানীতে গতকাল বাস চলাচল শুরু হলেও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে যাত্রী বহন করা হয়। গুলিস্তান থেকে তোলা ছবি

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২২ দিন পর গতকাল রাজধানীর রাস্তায় চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। গণপরিবহন চলাচলের প্রথম দিন গতকাল বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। দুপুরে বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, মগবাজার, কাকরাইল, গুলিস্তান ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। গত প্রায় এক মাস রাজধানীতে যানজটের মাত্রা এতটা তীব্র ছিল না। এদিন কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশেই যানজটে গাড়ি আটকে থাকতে দেখা গেছে। মহাখালীর আমতলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। যানজটের কারণে বাসে যেতে লেগেছে প্রায় ৩০ মিনিট। একইভাবে সাতরাস্তা থেকে বনানী পর্যন্ত সড়কেও বেশ যানজট দেখা গেছে। এ ছাড়া গতকাল জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে অনেক জেলায় যাত্রী ছিল কম। বাস চলাচলের প্রথম দিন বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্পটে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়। কখনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে, আবার কখনো মানা হয়নি।

মালবাহী ট্রেনে যাচ্ছে যাত্রী : সারা দেশে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও জরুরি মালামাল পরিবহনে রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে কিছু পার্সেল ট্রেন চালু রয়েছে। মালামাল ছাড়া এসব ট্রেনে যাত্রী বহন নিষিদ্ধ থাকলেও বর্তমানে সব পার্সেল ট্রেনে অবাধে যাত্রী বহন করছেন রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মচারী। এ ছাড়া একই সঙ্গে ট্রেনে দায়িত্বরত রেল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় চলছে মাদক পরিবহন। বুধবার বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার জংশন স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী পার্সেল ট্রেনের একমাত্র যাত্রীবাহী কামরায় ঠাসাঠাসি করে বসে রয়েছেন শতাধিক যাত্রী। আবার স্টেশনে থামার পর ট্রেনটি থেকে নেমে যান ২০-২৫ জন। বেশির ভাগ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্ক।

সর্বশেষ খবর