শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় কাউন্সিলর খুনের মামলায় আরও এক আসামি গ্রেফতার

বিচার দাবিতে রাস্তায় মেয়র-কাউন্সিলররা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় কাউন্সিলর খুনের মামলায় আরও এক আসামি গ্রেফতার

বিচার দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেন মেয়র ও কাউন্সিলররা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কার্যালয়ে ঢুকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার ৯ নম্বর আসামি মাসুমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে তাকে জেলার চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে মামলায় দুজন গ্রেফতার হলেন। এর আগে বুধবার মামলার চার নম্বর আসামি মো. সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট যৌথ অভিযান চালিয়ে মাসুমকে গ্রেফতার করে। কোথাও পালিয়ে যেতে মাসুম চান্দিনা বাসস্ট্যান্ডে এসেছিল বলে  ধারণা করা হচ্ছে। তাকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত সোহেলের ভাই সৈয়দ মোহাম্মদ রুমন। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর নগরীর পাথুরিয়াপাড়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ওই দুজন। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে রাস্তায় মেয়র-কাউন্সিলররা : কুসিক কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল এবং আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলররা। গতকাল কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে মেয়র, সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন ও সমাবেশে কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘কুমিল্লার ইতিহাসে এমন নৃশংস ঘটনা অতীতে ঘটেনি। এ ঘটনাকে এখানেই থামাতে হবে, না হলে এমন খুনের ঘটনা ঘটেই যাবে। কাউন্সিলর সোহেল একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তাকে এভাবে খুন করা হলো, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’ তিনি বলেন, ‘খুনের পরিকল্পনাকারী ও মূল ঘাতকরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। দ্রুত তাদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এ হত্যার বিচার এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই।’ এ সময় বক্তব্য রাখেন কুসিক প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি, কাউন্সিলর সরকার মো. জাবেদ, মাসুদুর রহমান মাসুদ প্রমুখ। মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে একই দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

ছয় দিন আগেও আসামিদের অস্ত্রের মহড়া : কুমিল্লায় প্রকাশ্য দিবালোকে কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে খুন করার ছয় দিন আগেও সুজানগরে অস্ত্রের মহড়া ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছিলেন আসামিরা। গভীর রাতের গুলির ঘটনায় এলাকাবাসী পুলিশকে খবরও দিয়েছিল। এ বিষয়ে নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইসমাইল জানান, নগরীর সুজানগরের একটি বাসায় কাউন্সিলর সোহেল হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি সাব্বির এক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে যান। ১৬ নভেম্বর রাতে সাব্বির ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় এলাকাবাসী ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করেন। তখন সাব্বির ও তার সহকর্মী সোহেল হত্যা মামলার মূল আসামি শাহ আলম, জেল সোহেল, সাব্বির পিস্তল দিয়ে ৬-৭ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। তারা এলাকাবাসীকে উদ্দেশ করে গালাগাল ও সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

ওই রাতের ঘটনার বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ‘ওই রাতের ঘটনা আমি পরে অবগত হয়েছিলাম।’

সর্বশেষ খবর