মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পথশিশুর ৩৭ শতাংশ ঘর ছাড়ে ক্ষুধা দারিদ্র্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক

পথশিশুর ৩৭ শতাংশ ঘর ছাড়ে ক্ষুধা দারিদ্র্যে

তথ্যসূত্র : বিবিএস

পথশিশুদের মধ্যে মেয়ের তুলনায় ছেলের সংখ্যা অনেক বেশি। এর মধ্যে ৮২ শতাংশ ছেলে এবং ১৮ শতাংশ মেয়েশিশু রয়েছে। এদিকে ৬৪ শতাংশ পথশিশু তাদের পরিবারে ফিরে যেতে চায় না। ফিরে যাওয়ার মতো পরিবার নেই ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ পথশিশুর। অন্যদিকে ঢাকা বিভাগে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ পথশিশু অবস্থান করছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশের বসবাস। এসব পথশিশুর মধ্যে ৮২ শতাংশ ছেলে এবং ১৮ শতাংশ মেয়ে। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী পথশিশু রয়েছে ৫৪ শতাংশ। এ ছাড়া পথশিশুদের ১২ শতাংশই মাদকাসক্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পথশিশু জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে পথশিশু জরিপ ২০২২-এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনও উপস্থিত ছিলেন। জরিপ ফলাফলে দেখা গছে, এই শিশুরা পারিবারিক ও সামাজিক বাধাসহ বিভিন্ন কারণে পথশিশু হতে বাধ্য হয়েছে। পরিবারে জায়গা নেই ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ শিশুর। পরিবার গ্রহণ করে না ২১ দশমিক ৩ শতাংশ শিশুকে। আর পরিবারই নেই ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ পথশিশুর। পরিবারে প্রতিকূল পরিবেশ ১২ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুর। সামঞ্জস্যপূর্ণ পাবিবারিক পরিবেশ নেই ১১ দশমিক ৯ শতাংশ পথশিশুর। নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ পথশিশু। পরিবারে কাজের চাপ রয়েছে ১১ শতাংশ পথশিশুর। আর ঘরে ফিরতে সামাজিক বাধা রয়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুর। জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড হেলথ উইংয়ের পরিচালক মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেন, যথাযথ জরিপ পদ্ধতি অনুসরণ করে সারা দেশে প্রথম পর্যায়ে ০ থেকে ১৭ বছর বয়সী পথশিশুদের ওপর কুইক কাউন্ট পরিচালনার মাধ্যমে স্যাম্পলিং ফ্রেম প্রণয়ন করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী পথশিশুদের ওপর ‘পথশিশু জরিপ ২০২২’ পরিচালিত হয়। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, লিঙ্গভিত্তিক বিভাজনে মেয়েদের তুলনায় ছেলে পথশিশুর সংখ্যা অনেক বেশি, একজন মেয়ের বিপরীতে চারজন ছেলে শিশু। পথশিশুদের গড় বয়স ১২.৩ বছর। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, পথশিশুদের সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৪ শতাংশ চট্টগ্রাম বিভাগ এবং সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৯ শতাংশ সিলেট বিভাগের জেলাগুলো থেকে এসেছে। এক্ষেত্রে পথশিশুর নিজ জেলা ময়মনসিংহ সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বরিশাল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, ভোলা ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, কুমিল্লা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ, কিশোরগঞ্জ ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং কক্সবাজার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। প্রধানত ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ পথশিশু দারিদ্র্য, ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ বাবা-মা শহরে আসার কারণে এবং ১২ দশমিক ১ শতাংশ কাজের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে শহরে এসেছে। প্রতি পথশিশুর পাঁচজনের দুজনই একা একা শহরে এসেছে। ১০ জন পথশিশুর তিনজন কখনই স্কুলে ভর্তি হয়নি। সব পথশিশুর কেবল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছে। খুব নগণ্য সংখ্যক পদ্ধশিশু নিম্ন ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করেছে। প্রায় চার ভাগের একভাগ পথশিশু ধূমপান করে এবং ১২ শতাংশ মাদকের নেশায় আসক্ত। আর ৬৪ শতাংশ পথশিশু তাদের পরিবারে ফিরে যেতে চায় না।

 

সর্বশেষ খবর