২৮ অক্টোবর স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে ওইদিন দুপুরে মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিরতিহীন কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। সমাবেশে ঢাকার বাইরে থেকে আসার পথে বাধা আসতে পারে এই আশঙ্কায় ২৫ তারিখের মধ্যেই রাজধানীর আশপাশসহ সারা দেশের নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আনার পরিকল্পনা দলটির। এদিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ করার মহাপ্রস্তুতি চলছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে। কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দলনেতা করে সারা দেশের সাংগঠনিক জেলাগুলোর সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বিভাগীয় প্রস্তুতি সভাও হয়েছে। বাকি বিভাগগুলোর সভাও পর্যায়ক্রমে হবে। শুধু বিএনপিই নয়, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বিশেষ করে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল এবং মহিলা দলও এ মহাসমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম। এসব টিম প্রধানদের সঙ্গে অগ্রগতি নিয়ে দফায় দফায় কথা বলছেন সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা। বিএনপি নেতারা বলছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত সমাবেশই মহাসমাবেশে রূপান্তরিত হবে। এর আগে ১৬ অক্টোবর যুব সমাবেশে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের মাঝে আরও বেশি উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। নেতা-কর্মীরা আশঙ্কা করছে, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার ঢাকামুখী গণপরিবহন বন্ধ করতে পারে। বিভিন্ন জেলা উপজেলার নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করতে পারে। সেদিকে দৃষ্টি রেখে আগেই সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের রাজধানী এবং এর আশপাশের এলাকায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। যারা আগে আসবেন তারা আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে অবস্থান করবেন। মহাসমাবেশ সফল করতে প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি কথা বলছেন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে। ক্ষেত্রবিশেষে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও সরাসরি কথা বলছেন তিনি। এসব বৈঠকে মহাসমাবেশ সফল করার পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নে নানা নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী ২৮ তারিখ শনিবার আমরা ঢাকায় মহাসমাবেশ করব। এই মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। তারপরে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আর থেমে থাকব না ইনশা আল্লাহ। অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে চিঠি : ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল বিকালে নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির যৌথসভা : ‘মহাসমাবেশ’ সফল করার লক্ষ্যে আজ রবিবার যৌথসভা ডেকেছে বিএনপি। দুপুর ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং পরিচালনা করবেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।