যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি না থাকার অসংখ্য ঘটনার কথা জানা গেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করতে ও শাস্তি দিতে বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ নেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম ব্যুরো গতকাল ওয়াশিংটনে ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস ফর ২০২৩’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে আছে নির্বিচার, বেআইনি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন অথবা সরকারের পক্ষ থেকে নির্মম, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, কারাগারে কঠোর ও জীবনের ওপর হুমকি আসতে পারে এমন পরিস্থিতি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে আরও আছে নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক কারণে বন্দি, অন্য দেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিপীড়ন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর নির্বিচার ও বেআইনি হস্তক্ষেপ এবং কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আসলে তার আত্মীয়দের শাস্তি দেওয়ার প্রবণতা। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন তথ্য পাওয়া গেছে যে, সরকার অথবা সরকারের প্রতিনিধিরা নির্বিচারে ও বেআইনিভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, যার মধ্যে আছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে। পেশাদারি মানদণ্ড মেনে তৈরি করা ইউনিটের বিরুদ্ধেই মূলত এ ধরনের অভিযোগ। কিছু পদক্ষেপে মানুষ গুরুতর শারীরিক আঘাতের শিকার হয়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা মারাও গেছেন। পুলিশের নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের সব ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত হওয়া আবশ্যক ছিল। তবে সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত মানুষের সংখ্যার কোনো আনুষ্ঠানিক হিসাব প্রকাশ করেনি বা এসব অভিযোগের তদন্ত করার কোনো স্বচ্ছ উদ্যোগও হাতে নেয়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব ঘটনা নিরীক্ষার কাজে নিয়োজিত ইউনিটগুলোর স্বাধীনতা ও পেশাদারি মান সম্পর্কে সন্দিহান। অল্প কয়েকটি ঘটনার ক্ষেত্রে সরকার অভিযোগ এনেছে, কিন্তু সেসব ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ হলেও তারা শুধু প্রশাসনিক শাস্তি পেয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে কমেছে। মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর আকারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা সহিংসতার হুমকি, অন্যায্য কারণে গ্রেফতার ও নির্যাতন, সেন্সরশিপ ও মতপ্রকাশকে সীমিত রাখতে ফৌজদারি মামলা দায়ের অথবা দায়ের করার হুমকি। ইন্টারনেটে স্বাধীন মতপ্রকাশে রয়েছে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। শান্তিপূর্ণ গণজমায়েত ও দল গঠনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে বেসরকারি ও সামাজিক সংগঠন তৈরি, অর্থায়ন ও পরিচালনা সীমিত করার জন্য আইন, চলাচলের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের বাধা দেওয়া। এ ছাড়া রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে গুরুতর ও অযৌক্তিক বিধিনিষেধ, সরকারে গুরুতর দুর্নীতির প্রবণতা, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুতর সরকারি বিধিনিষেধ ও এদের হেনস্তা করার প্রবণতা। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রবার্ট এস গিলক্রিস্ট ব্রিফিংয়ে জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিদ্যমান মৌলিক মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রাখবে, যার মধ্যে আছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সংগঠনের স্বাধীনতা। একই সঙ্গে সরকারকে এই অধিকারগুলোকে সমুন্নত রাখতে হবে।
শিরোনাম
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
- মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
- আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধবিমান চুক্তি চূড়ান্ত করতে ফ্রান্সে জেলেনস্কি
- অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন
- ভারতের চা, মশলা, আমসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প
- নওগাঁর মান্দায় ধানের শীষে ডা. টিপুর নির্বাচনী পথসভা
- পাঙ্গাস পোনা শিকারের দায়ে জেলের কারাদণ্ড
- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে
- রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
- নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি সারজিসের
- কলাপাড়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ জন হাসপাতালে
- দিনাজপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারের মাঝে উপকরণ বিতরণ
- মুন্সীগঞ্জে পদোন্নতির দাবিতে প্রভাষকদের ‘নো প্রমোশন, নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি
- এ রায় প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচারের প্রতিজ্ঞা: চিফ প্রসিকিউটর
- ১৬ কোটি টাকার হাসপাতাল চার বছরেও চালু হয়নি
- আমি আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি : শেখ হাসিনার আইনজীবী
- বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবরে সেই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
- শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
- ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ২০৮৮ মামলা
- শাবিপ্রবিতে স্টুডেন্ট রাইটস ফোরামের ফ্রি হেল্থ ক্যাম্প
মার্কিন প্রতিবেদন
বাংলাদেশে মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই
দায়মুক্তি নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর