অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হতে এখন অনেকেই দাবি জানাচ্ছেন। নিজেকে যেমন উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন তেমনি পছন্দের ব্যক্তিকেও এই পদে নিয়োগ দেওয়ার দাবি তুলছেন। এই দাবির মধ্যে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের নাম এসেছে। এমনকি আলোচনা হচ্ছে হিরো আলমের নামও। সম্প্রতি নতুন উপদেষ্টা পরিষদের তিনজন নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে নতুন উপদেষ্টাদের যোগ্যতা ও অতীত কর্মকান্ড নিয়ে। বিশেষ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এসব ঘটনার পর এখন বহু ব্যক্তি উপদেষ্টা হওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। আন্দোলনে সক্রিয় এক শিক্ষককে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি উঠেছে। তিনি নিজেও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিভিন্নভাবে।
জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদে উত্তরবঙ্গ থেকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। এর মধ্যে গত ১২ নভেম্বর উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগ থেকে দুজন করে চারজন উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে তারা এই দাবি জানান। তারা আখতার হোসেন ও সারজিস আলমকে উপদেষ্টা নিয়োগ করার দাবি জানান। একই দাবিতে রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেপ্রণ। তারা দাবি জানান, উত্তরাঞ্চল থেকে কাউকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার। দাবি মানলে সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ রংপুর বিভাগ অচল করার হুমকি দিয়ে আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে উত্তরবঙ্গের ছাত্র-জনতার পক্ষে তিন দফা ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় জোড়ালো ভূমিকা পালনকারী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্ট্যাটাস নিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপদেষ্টা নিয়োগ পাওয়ার পর এ ঘটনা বেড়ে গেছে। শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে একজন উপদেষ্টা হয়েছেন এমন খবরে অনেকেই নিজেকে উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত করতে বলছেন। এর মধ্যে রয়েছে, নায়ক-নায়িকা, কণ্ঠশিল্পি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী, সমন্বয়করাও। অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি জানাচ্ছেন তারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নানা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এজন্য তাদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিত। একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত হিরো আলমকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চায়। হিরো আলম নিজেও উপদেষ্টা হতে চান। তার ভক্তদের দাবি, আওয়ামী লীগ আমলে দুবার সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করে নির্যাতনের শিকার হন হিরো আলম। এখন তাকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চান তারা। মঙ্গলবার রাজধানীর রামপুরায় নিজ অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে ফারুকী ভাইয়ের কোনো ভূমিকা দেখিনি, মাঠে দেখিনি। দু-একটি স্ট্যাটাস দিতে দেখেছি। জনগণ মনে করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইয়ের চেয়ে হিরো আলম যোগ্য, কারণ হিরো আলম আন্দোলনের সময় মাঠে ছিল। জনগণ ফারুকী ভাইকে মেনে নেয়নি।’ তিনি বলেন, হিরো আলম রাজনীতির মাঠে কথা বলতে পারে, বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। যে কোনো অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করে। এমন সব যোগ্যতা তার আছে।