জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাফিয়াতন্ত্রীদের অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের যুবসমাজ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। শহীদ আবু সাঈদ “বুকের ভিতর তুমুল ঝড়/বুক পেতেছি গুলি কর” বলে বন্দুকের নলের মুখে বুক পেতে দিয়ে আমাদের এ ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন। তার এ আত্মত্যাগই মূলত স্বৈরাচারের ভিত নাড়িয়ে দেয়।’ রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণের সঙ্গে গতকাল মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমির রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে পুরো দেশ একটি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরিতে পরিণত হয়েছিল। আমি এ আসনে প্রার্থী হলেও এখানে আসার সুযোগ ছিল না। এমনকি এ আসনে আমাদের দায়িত্বশীলকে নির্বাচনের মাত্র তিন দিন আগে উঠিয়ে নিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। নির্বাচনের এজেন্ট ও সহকর্মীদের রাস্তায় হাঁটতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বরং তাদের উঠিয়ে নিয়ে আটক করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। দিনশেষে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিলেও অন্যদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা দেশের বরেণ্য আলেম-ওলামাদের বিশেষভাবে টার্গেট করেছিল। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে কথিত রিমান্ডের নামে চালানো হয়েছিল অবর্ণনীয় নির্যাতন। হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জেলে থেকে জেলে স্থানান্তর করে তাদের বেইজ্জতি ও নাজেহাল করা হয়েছিল। বিচারের নামে প্রহসনসহ নানাভাবে তাদের শহীদও করা হয়েছে।
তিনি আল্লামা সাঈদী (রাহি.)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, একজন হাসিখুশি ও প্রাণবন্ত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি চিকিৎসকরাও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। এর মধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবে কী হয়েছে আল্লাহই ভালো জানেন।