আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও এ সরকারের শপথ গ্রহণের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামত প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে করা রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।
এ সময় আদালত বলেন, বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধ বলে মেনে নিয়েছে, কাজেই এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলও অন্তর্বর্তী সরকারকে মেনে নিয়েছে, সুতরাং এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ গত মাসে এই রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম মনিরুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অনীক আর হক, তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব। অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, মালিশাস প্রসিকিউশন (প্রক্রিয়ার অপব্যবহার) হওয়ায় রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈধই ছিল। রিট খারিজ হওয়ায় এটি আবারও প্রতিষ্ঠিত হলো। আদালত রিটকারীকে ২৫ হাজার টাকা খরচ ধার্য করেছিলেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের অনুরোধে খরচ বাদ দিয়েছেন। আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ বলেন, কী মতামত দিয়েছে সেটা নোটিস দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তারা সেটা দেয়নি। এরপর রিট করি। শুনানি শেষে হাই কোর্ট রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন। আমার কথা হচ্ছে কোনো রেফারেন্স পাঠানো হয়নি, কোর্ট কোনো মতামত দেননি। বলা হচ্ছে, ভার্চুয়ালি কোর্ট বসেছে। কিন্তু রুলসে যেভাবে আছে সেভাবে কোর্ট বসেনি। আমরা এ বিষয়ে আপিল বিভাগে যাব। গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার গঠনের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান। আপিল বিভাগ তার মতামত দেন। মতামতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্তে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন।