চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশিদের আম গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে ভারতীয়রা। এ সময় বিজিবি স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে তাদের এ কার্যক্রমকে রুখে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে দুজনের নাম নিশ্চিত করেছেন এলাকাবাসী। তারা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘুনটোলা বিশ্বনাথপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে রনি, কালীগঞ্জ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক। গতকাল উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিজিবি জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।
বিজিবির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ভারতীয়রা পিছু হটে এবং বিকাল ৪টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে গাছ কাটার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনায় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে বিএসএফ ও শতাধিক ভারতীয় মিলে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ করে এবং বাংলাদেশ প্রান্তের ১২ থেকে ১৫টি আম গাছ কেটে ফেলে। পরে বিজিবির টহল দল মাইকিং করে স্থানীয়দের সহযোগিতার আহ্বান জানায়। এ সময় স্থানীয়রা বিজিবিকে সহযোগিতা করতে সীমান্ত এলাকায় ছুটে আসেন। দুই পাশে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিএসএফ সদস্যরা ৪টি সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। স্থানীয় ভারতীয়রা পাথর ছুড়ে মারে। এতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। পরে ভারতীয়রা কাটা গাছ ও ডালপালা ফেলে পালিয়ে যায়।
বিনোদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির সহযোগিতার মাইকিং শুনে বিজিবিকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসি। এ সময় বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকরা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল, ককটেল ও পাথর নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া ভারতীয়রা জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দেন। পরে আমাদের পাল্টা ধাওয়ায় তারা কাটা গাছ ফেলে পালিয়ে যায়।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, চৌকা ও কিরণগঞ্জ বর্ডার এলাকার মাঝামাঝি স্থানে ১৭৭ এর থ্রি-এস বরাবর কিছু আম গাছ ছিল। সেখানে আম গাছ কাটা নিয়ে ভারতীয় নাগরিক ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণ নিজ নিজ দেশের জন্য শূন্য লাইন বরাবর দাঁড়িয়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা বিজিবির জনবল বৃদ্ধি করেছি। এ ছাড়া বিকাল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেটি অন্যায় হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেবে এবং এটার বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরাও গ্রাউন্ডে আছি। এ ছাড়া শূন্য লাইন কেউ যেন অতিক্রম না করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক জনগণ আমাদের পাশে আছে এবং সামনেও থাকবে। আমরা তাদের (জনগণকে) রিকোয়েস্ট করতে চাই শূন্য লাইন থেকে দূরে সরে আসার জন্য। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব সময় প্রস্তুত।