সদ্য জারি করা সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা। গতকাল সচিবালয়ের নতুন ভবনের নিচে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তারা।
এর আগে সচিবালয়ে বাদামতলা গণজমায়েত করে বিক্ষোভ করেন ঐক্য ফোরামের নেতারা। বিক্ষোভ মিছিল করে নতুন ভবনের নিচে যান। সেখানে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর বলেন, অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এদিন স্বরাষ্ট্র ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা আটটি বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি। আলোচনার নামে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা আমাদের আস্থা ভেঙেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট আমলাদের হটানোর আহ্বান জানান।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বুধবারও (আজ) প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা মিছিল নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেবেন।
কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকারি কর্মচারী। আমরা নিয়মশৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। আগামীদিনে আরও বৃহত্তর কিছু আসবে।
অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। গত ৪ জুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ঈদের পর দ্বিতীয় কর্মদিবস থেকে পুনরায় আন্দোলন শুরু হলে ওই দিনই (সোমবার) বিকালে প্রথম বৈঠকে বসে কমিটি। এ কমিটির সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্ট। চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে- এমন বিধান রেখে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন হয়। এরপর ২৫ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অভিহিত করছেন। এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।