নৈতিক স্খলনের দায়ে গত মঙ্গলবার শোকজ লেটার পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব সারওয়ার তুষার। এতে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁর জবাব চেয়ে শোকজ লেটার জারি করেছে দলটি। এ নিয়ে দলের ভিতরে বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে দলটিকে। এ নিয়ে গত তিন মাসে চার কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে শোকজ লেটার জারি করতে হয়েছে দলটিকে। অপর তিনজন হলেন গাজী সালাহউদ্দিন তানভীর, আবদুল হান্নান মাসউদ ও জোবাইরুল ইসলাম মানিক। এদের মধ্যে গাজী সালাহউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে জারি করা অব্যাহতি আদেশ এখনো বহাল। নিজ কৃতকর্মের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা পেয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। ধানমন্ডিতে মব সৃষ্টির চেষ্টাকালে আটক হওয়া তিনজনকে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল। জবাবে ভুল স্বীকার করেন এবং আগামীতে এ ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে অঙ্গীকার করেন তিনি। এরপর তাঁর ওপর আরোপিত কারণ দর্শানো নোটিস প্রত্যাহার করে নেয় এনসিপি। চলতি মাসেই এক বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জোবাইরুল ইসলাম মানিক। ‘বিগত ১৬ বছরে একজন মাফিয়াকে হটাতে পারছি। আমাদের বুঝ দিয়ে আবার যদি কেউ মাফিয়া হতে চায়, তাদের বলব আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই’, বলে চট্টগ্রামে এক বক্তব্যে উল্লেখ করেন মানিক। এর জেরে ১০ জুন তাঁর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিসের পাশাপাশি সতর্কবার্তা জারি করে এনসিপি।
এর আগে গত এপ্রিলে যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাহউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক নিয়োগে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ এবং এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপার কাগজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলে তাঁর বিরুদ্ধে শোকজ লেটার জারি করে এনসিপি। এখনো তাঁর বিরুদ্ধে জারি রয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অব্যাহতির আদেশ। এরপর গত মে মাসে দৈনিক জনকণ্ঠ কার্যালয়ে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে সতর্কবার্তা জারি করে এনসিপি। সর্বশেষ যুগ্ম সদস্যসচিব সারওয়ার তুষার দলের এক কেন্দ্রীয় নারী সহকর্মীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী সহকর্মীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের কল রেকর্ডের অডিও ভাইরাল হয়েছে। এনসিপির নেতাদের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষার্থে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এনসিপি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সব জায়গাতেই আমরা দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চেষ্টা করছি। গঠনমূলক যে কোনো সমালোচনাকে আমলে নেওয়া হচ্ছে এবং সেগুলো লোকদেখানো অর্থে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে না। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের স্বার্থে আমরা দলের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকব।’