রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন ও সহিংসতা এড়াতে শুধু ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে ওআইসির উদ্যোগে উত্থাপিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজল্যুশন গৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে মানবাধিকার পরিষদে প্রদত্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাসংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত একটি অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।’ এ অধিবেশনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত রেজল্যুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। রেজল্যুশনে রোহিঙ্গাদের জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকতর দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এ ছাড়া এতে জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে নিরবচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গাসংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
রেজল্যুশনটিতে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবসানের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সব স্তরের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অংশগ্রহণ এবং অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনকাঠামো স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।