পেপ টেস্টের মাধ্যমে জরায়ু মুখের কোষ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এ পরীক্ষায় কোষের এমন কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা হয় যা ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। এ পরীক্ষাটি জরায়ু ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা নির্ণয় করতে সক্ষম যখন এর সহজেই চিকিৎসা সম্ভব।
কখন করতে হবে: কোন ধরনের জরায়ুর সমস্যা থাকলেই কেবল এ পরীক্ষাটি করতে হবে, তা কিন্তু নয়। ২১ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত প্রত্যেক মহিলাদের প্রতি তিন বছর পর পর পরীক্ষাটি করা উচিত। যদি পেপ টেস্টের সঙ্গে HPV-DNA টেস্ট নর্মাল থাকে তবে প্রতি পাঁচ বছর পর পর এ টেস্টটি করা যাবে। গর্ভাবস্থায়ও পরীক্ষাটি করা যায়।
কিভাবে করা হয় : এ পরীক্ষার জন্য চামচের মতো একটি যন্ত্র মাসিকের রাস্তায় ব্রাশ এবং কাঠির সাহায্যে জরায়ু মুখ থেকে কোষ নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এতে আপনি তেমন ব্যথা পাবেন না, তবে সামান্য অস্বস্তি লাগতে পারে।
ফলাফল এবনরমাল হলে কি করতে হবে : এ পরীক্ষার ফলাফলে যদি কোষের অস্বাভাবিক কোনো লক্ষণ ধরা পড়ে, তবে ভয় পাবেন না, কারণ এটি সাধারণভাবে ক্যান্সার বোঝায় না। অনেক সময় জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণ বা প্রদাহ থেকেও এবনরমাল ফলাফল হতে পারে। সংগৃহীত কোষের পরিমাণ কম থাকলে এটি পুনরায় করার দরকার হয়। তবে পরীক্ষার ফলাফলে CIN বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা দেখা গেলে আপনাকে কলপসকপি এবং বায়পসি করার জন্য পাঠানো হবে। বায়পসি রেজাল্টের পর অথবা অনেক সময় কলপসকপি করাকালীন অবস্থাতেই চিকিৎসা করা হয়। এর বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে লিগ, কোল্ড কোয়াগুলেসন, কটারি, লেজার। এ চিকিৎসার পরও ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ফলোআপ করে যেতে হবে।
কোনো বিকল্প টেস্ট আছে কি : পেপ টেস্টের একটি বিকল্প হচ্ছে VIA টেস্ট যা সহজে এবং কম খরচে করা যায়। তবে সব ল্যাবরেটরিতে VIA টেস্ট হয় না। বলা যায়, জরায়ু ক্যান্সার একটি প্রতিরোধযোগ্য ক্যান্সার। কারণ এই টেস্টের মাধ্যমে ক্যান্সার হওয়ার আগেই নির্ণয় সম্ভব।
ডা. নুসরাত জাহান, সহকারী অধ্যাপক, ডেল্টা মেডিকেল কলেজ। ফোন : ০১৭৪৯৭৫৩০৫২