মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

কভিড-১৯ এক নতুন রোগ যা ফুসফুস ও শ্বাসপথকে আক্রান্ত করে। যে ভাইরাস দ্বারা এ রোগটি হয় তার নাম করোনা ভাইরাস।

উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে অবস্থান করুন : ঘরে অবস্থান করুন যদি আপনার  নি¤œলিখিত উপসর্গ থাকে-

উচ্চ তাপমাত্রা- এর মানে হলো আপনি আপনার বুকে বা পিঠে স্পর্শ করলে গরম অনুভব করবেন। এক্ষেত্রে থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপার প্রয়োজন নেই।

নতুন, অবিরাম কাশি- এর মানে হলো এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে প্রচুর পরিমাণে কাশতে থাকা অথবা ২৪ ঘন্টায় ৩ পর্ব বা তার অধিক পর্বে কাশতে থাকা। যদি আপনার স্বাভাবিক কাশি থাকে তাহলে এক্ষেত্রে সেটি আরও তীব্র হবে। এ সময়ে আপনি জেনারেল প্র্যাক্টিশনার, সার্জন, ফার্মেসি অথবা হাসপাতালে যাবেন না। বাড়িতেই অবস্থান করবেন।

বাড়িতে কতদিন অবস্থান করবেন: যদি আপনার করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকে, আপনি ৭ দিন বাড়িতে অবস্থান করবেন। যদি আপনি করোনাভাইরাসের উপসর্গ বহনকারী কারও সঙ্গে বসবাস করেন, তাহলে ওই ব্যক্তির উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রথম দিনটি থেকে আপনি ১৪ দিন ঘরে অবস্থান করবেন। যদি আপনি ৭০ বছরের বা তার বেশি বয়সের কারো সাথে বসবাস করেন, অথবা কোনো গর্ভবতীর সাথে বসবাস করেন অথবা আপনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন কারও সঙ্গে বসবাস করেন তাহলে আপনি ১৪দিন আলাদা ঘরে অবস্থান করবেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং ভাইরাস ছড়ানো কীভাবে পরিহার করবেন : প্রত্যেকেরই জানা উচিত কীভাবে তারা করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি বন্ধ করতে পারেন। এটি কিছু মানুষের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ: যাদের বয়স ৭০ বা তার বেশি, যারা দীর্ঘদিন অসুস্থ, যারা গর্ভবতী, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল।

কী করবেন : সাবান ও পানি দিয়ে ঘনঘন হাত ধোবেন। এটি কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে করবেন। যখনি বাড়ি আসবেন কিংবা কাজে যাবেন সর্বদা আপনার দুহাত ধুয়ে ফেলবেন। যদি সাবান ও পানি পর্যাপ্ত না থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার জেল ব্যবহার করবেন। কাশি কিংবা হাঁচি দেওয়ার সময়ে আপনার মুখ ও নাক টিস্যু অথবা আপনার জামার হাতা দিয়ে ঢেকে নিবেন। কখনো হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢাকবেন না। ব্যবহৃত টিস্যু যতদ্রুত সম্ভব বিনে অথবা ময়লা রাখার পাত্রে ফেলে দিন এবং এরপর আপনার দুহাত ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। করোনাভাইরাসের উপসর্গ বহনকারী লোকজনের সংসর্গ এড়িয়ে চলুন। একান্ত প্রয়োজন হলে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভ্রমণ করুন। ভ্রমণের সময় আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করুন। পারলে ঘরেই কাজ করুন।

কী করবেন না : অপরিষ্কার হাত দিয়ে আপনার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করবেন না। ঘরে অতিথি ঢুকাবেন না। বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ঢোকা না করে দিন।

যদি আপনি উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে থাকেন : যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চমাত্রার ঝুঁকি থাকে তাহলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন। তারা আপনাকে বলে দিবে আপনাকে বিশেষ কী করতে হবে। এই স্তরে আপনি আপনার জেনারেল প্র্যাক্টিশনার অথবা স্বাস্থ্যসেবা টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না।

কে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন : আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন যদি আপনার নি¤œলিখিত বিষয়গুলো থাকে: যদি আপনার অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়ে থাকে এবং আপনি ইমিউনোসাপ্রেস্যান্ট ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন। যদি আপনার কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি চলতে থাকে। যদি আপনার রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যান্সার থাকে, যেমন লিউকোমিয়া। যদি আপনার বুকের মারাত্মক সমস্যা থাকে, যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা তীব্র অ্যাজমা।

কীভাবে ছড়ায় : যেহেতু এটি একটি নতুন রোগ তাই এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে এটা জানা যায়নি করোনাভাইরাস একজনের কাছ থেকে আরেকজনের মধ্যে কীভাবে ছড়ায়। তবে ভাইরাসগুলো কাশির মাধ্যমে ছড়ায়।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় : এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস ভিত্তিক ২০১৯ (কভিড-১৯) প্রতিরোধ করার কোনো ভ্যাকসিন নেই, সুতরাং এই ভাইরাস প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হলো ভাইরাসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল

কলেজ ও হাসপাতাল।

 

সর্বশেষ খবর