কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় অংশের ত্রিপুরায় প্রাণী জাতীয় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র না থাকায় মাছসহ অনেক পণ্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না।
রপ্তানি বাড়াতে ত্রিপুরায় মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। তারা জানান, বন্দরের ভারত অংশে অ্যানিমেল কোয়ারেন্টিন সেন্টার (মাছের মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র) নেই।
তবে সবজি জাতীয় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন সেন্টার) থাকলেও এসব পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়নি ভারত।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, এ বন্দর দিয়ে ৪২টি পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারে ভারত। অন্যদিকে বাংলাদেশের সুযোগ রয়েছে সব পণ্য ভারতে রপ্তানির।
তবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আটটি ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে এসেছে। আর ২২টি বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা উল্লেখযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে- পান, বেল, তেঁতুল, জিরা, আদা, আগরবাতি, চকোলেট ও ঝাড়ু। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠানো পণ্যগুলো হলো- সিমেন্ট, কয়লা, পাথর, সাবান, প্লাস্টিক ডোর, কিচেন র্যাক, পিভিসি পাইপ, পিভিসি ডোর, পার্টিকেল বোর্ড, ধান ভাঙার মেশিন, গার্মেন্ট সামগ্রী, টাইলস, সিমেন্ট শিট, দড়ি, ইট ভাঙার মেশিন, বিস্কুট, সফট ড্রিংকস, টিন, ডিম ফোটানোর মেশিন বাক্স, গ্লাস ও চিটাগুড়। এ ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে এলপিজি ও এলএনজি গ্যাস।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুমিল্লার সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, রপ্তানির সুযোগ বাড়ানোর জন্য ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বারবার কথা বলেছি। কুমিল্লা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ত্রিপুরায় অ্যানিমেল কোয়ারেন্টিন সেন্টার। সেখানে পণ্যের মান পরীক্ষা করে রপ্তানি করা দুরূহ ব্যাপার। আমাদের ব্যবসায়ীরা রপ্তানি করতে আগ্রহী। সে সুযোগটা তৈরি করে দিতে হবে।
কুমিল্লা বিবিরবাজার স্থল ও শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা হারাধন পাল জানান, আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এ নিয়ে বহুবার বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি বৈঠকের অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল বন্দরের ত্রিপুরা অংশে কোয়ারেন্টিন সেন্টার স্থাপন করা। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন, ক্রমান্বয়ে সব বন্দরেই এ সুবিধা তারা চালু করবেন। সে পর্যন্ত আখাউড়া (ভারত অংশে আগরতলা) বন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কুমিল্লা নগরী থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিবিরবাজার স্থলবন্দর। এটি দেশের ১৩ তম স্থলবন্দর। ২০০২ সালের ১৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু করলেও কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল। এ শুল্ক স্টেশনের দূরত্ব রাজধানী ঢাকা থেকে ১১১ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে দূরত্ব ১৪৭ কিলোমিটার। আর ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ৬১ কিলোমিটার। ভৌগোলিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিবিরবাজার স্থলবন্দর।