ভারতের বিতর্কিত ইসলামি বক্তা জাকির নায়েকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত তিন বছরে বিশ্বের ভিন্ন তিনটি দেশ থেকে প্রায় ৬০ কোটি রুপি জমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে বলে ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে। পরে জাকির নায়েকের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সেই অর্থ স্থানান্তর করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুম্বাই পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দেশটির জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া।
অর্থ স্থানান্তরের সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এখনও জানি না কী জন্য এই অর্থ এসেছিল। আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে এসব অর্থের হদিস পেয়েছি। টাকাগুলো পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছিল।”
ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমেই পিস টিভির কার্যক্রম পরিচালনা করতেন জাকির নায়েক। তবে অনুসন্ধানে পাওয়া ৬০ কোটি রুপি তার এনজিও ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নামে নয়, তার নিজের অ্যাকাউন্টে এসেছিল বলে জানান মুম্বাই পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “আমরা জাকির নায়েকের আয়ের উৎস সম্পর্কে তাদের (আইআরএফ কর্মকর্তাদের) জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি, অ্যাকাউন্টগুলোতে টাকা জমাদানকারী ও নায়েকের মধ্যে সম্পর্কের ব্যাপারে।”
আইআরএফ ছাড়াও আইআরএফ এডুকেশনাল ট্রাস্ট নামে জাকির নায়েকের আরেকটি এনজিও রয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, এই দুটি এনজিওর বিরুদ্ধে ভারতের ‘ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট-২০১০’ এর আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
ওই আইনের আওতায় দুটি এনজিওই ‘শিক্ষামূলক’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত হলেও তারা বিদেশি তহবিল নিয়ে ‘ধর্মীয় ও ধর্ম-সংক্রান্ত’ কাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ থাকায় সেটি আইনের লংঘন কি না সেটি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে বিদেশ থেকে আসার পর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ডে স্থানান্তর করা ওই ৬০ কোটি রুপির মধ্যে কোনো অবৈধ অর্থ নেই বলে দাবি করেছেন জাকির নায়েকের ঘনিষ্ঠ একজন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, “কোনো অবৈধ লেনদেন হয়নি। ব্যাংক হিসাবে এ অর্থ এসেছিল এবং আয়কর বিভাগ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আইআরএফের সব লেনদেনের তথ্য যাচাই করা। যা-ই হোক এসব অর্থ সাদা এবং সব তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাড়াতেও এটা সাহায্য করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব