মিথ্যা হয়রানি কিংবা বিয়ের প্রস্তাবে, অথবা বাড়িভাড়া নিয়ে ঝামেলা কিংবা প্রেমে প্রত্যাখ্যান। এসবগুলো ঘটনায় বিপরীত লিঙ্গের মেয়েটিকে জব্দ করার একটাই উপায়! আর তা হল অ্যাসিড দিয়ে মুখ পুড়িয়ে দেওয়া।
এতে সারাজীবনের মতো ওই মুখ সমাজের চোখে ‘বিকৃতদর্শন’ করে দেওয়া তো যায়। তেমনই এক মেয়ে ছিল প্রীতি। ভারতীয় নৌ-সেনার সেবিকা হিসাবে যোগ দিতে দিল্লি এসেছিলেন তিনি। প্রতিবেশী যুবক অঙ্কুরলাল পনওয়ারের বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় অ্যাসিড ছুড়ে মারা হয় তার মুখে। ফুসফুস ও চোখের সংক্রমণে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয় তাকে। ২০১৩ সালের মে মাসের ঘটনায় পনওয়ারকে গত বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির বিশেষ মহিলা আদালতের বিচারক এ এস সিন্ডে।
ঠিক তখনই নিউ ইয়র্কের ফ্যাশন র্যাম্পে হাঁটলেন অ্যাসিড আক্রান্ত ভারতীয় তরুণী রেশমা কুরেশি। অ্যাসিড হানায় তিনিও চোখ হারিয়েছেন। মুখের আকার দেখলে হয়তো নিজেকেই আর চিনতে পারেন না রেশমা। সাধারণত সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, ফ্যাশন উইকের ক্ষেত্রে তথাকথিত অর্থে সুন্দরীদেরই হাট বসে। সেই ভাবনাতেই সম্পূর্ণ পরিবর্তন এনে দিলেন রেশমা। প্রীতি বা আরও পাঁচটা অ্যাসিড আক্রান্ত মেয়ে বা তাদের পরিবারের যন্ত্রণা হয়তো খানিকটা হলেও লাঘব করলেন রেশমা।
লম্বা হাতা সাদা রংয়ের গাউন পরে রেশমা হাঁটছেন। গাউনের উপর ভারী সুতার কাজ। গাউনের নকশা ভারতীয় ডিজাইনার অর্চনা কোচ্চারের। করতালিতে রেশমাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন দর্শকরা। এফটিএল মোদা নামে একটি ফ্যাশন প্রোডাকশন সংস্থার ডাকে হাঁটলেন রেশমা। রেশমা শুধু র্যাম্পে হাঁটার জন্য প্রথাগত ভাবনায় বদল এনেছেন, তা নয়। বাজারচলতি ক্ষতিকারক পণ্যের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশ, ক্ষতস্থান ঢাকার জন্য ব্যবহৃত হয়। সাময়িক মুক্তি মিললেও ব্যবহারকারীর দ্বিগুণ ক্ষতি হয়। তাই অ্যাসিড আক্রান্তদের প্রকাশ্যে আসতে অনুরোধ করে রেশমা বললেন, ‘‘এ এক অসামান্য অভিজ্ঞতা। আমার জীবনে সত্যিই পরিবর্তন এল।”
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬/হিমেল-১৭