পশ্চিমবঙ্গের ২০টি জেলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বোমা, গুলি, মারধর, বুথ দখলের মধ্য দিয়েই ভোটগ্রহণ চলছে। সোমবার সকাল ৭টায় শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
এদিকে, ভোটগ্রহণের শুরুতেই বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। ভোটদানে বাধা, ব্যালট ছিনতাই, এজেন্টকে ঢুকতে বাধা, ব্যালটে জোর করে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ বিরোধীদের। এর মধ্যে কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর দিনাজপুরসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে এ ধরনের অভিযোগ এসেছে। সকালে ভোট শুরু হতে না হতে তার সত্যতাও মিলছে। খবর-আনন্দবাজার'র।
বড় ধরনের ঘটনা ঘটেছে বাগদা, ভাঙড়, তমলুকে। পাণ্ডুয়া, জামবনি, রঘুনাথগঞ্জ, নওদাসহ আরও বহু জায়গায় বিরোধীদের মারধর, বুথ দখলের অভিযোগ এসেছে।
রাতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার বুধাখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম কর্মী দেবু দাস এবং তার স্ত্রী উষা দাসকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
কোচবিহারের দিনহাটায় রবিবার রাতভর গুলির লড়াই চলেছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুইজন। তাদের দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর দিনাজপুরে বিরোধী দলের এজেন্টকে তৃণমূল বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেগঙ্গার চাপাতলায় এক কংগ্রেস প্রার্থীকে মারধর করা হয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙরে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এক সন্ত্রাসের আবর্তে রাজ্যব্যাপী শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন।
এবার নির্বাচন হচ্ছে একদফায়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মোট আসনের ৩৪ শতাংশে শাসক দল ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নেয়ায় আজ সোমবার ভোট হচ্ছে ৬৬ শতাংশ আসনে।
৫ কোটি ভোটারের মধ্যে ভোট দিচ্ছেন ৩ কোটি ৩৮ লাখ। ভোট হচ্ছে ৪৩ হাজার ৬৭টি ভোটকেন্দ্রের ৪৭ হাজার ৪৫১টি বুথে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩১ হাজার ৮২৭টি আসনে ভোট হচ্ছে সোমবার। মোট প্রার্থী ১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৯ জন।
থানা পর্যায়ের পঞ্চায়েত সমিতির ৬ হাজার ১৫৭টি আসনে প্রার্থী সংখ্যা ২২ হাজার ৩৬২ জন। আর জেলা পরিষদের ৬২১টি আসনে প্রার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৮৩৪ জন।
এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তৃণমূলের ৩১ হাজার ৭০৯ জন, বিজেপির ২২ হাজার ৬৩৭ জন ও বামদলের ৫ হাজার ৪৯৭ জন প্রার্থী।
থানা পর্যায়ের পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে তৃণমূলের রয়েছে ৬ হাজার ১১৩ জন, বিজেপির ৪ হাজার ৯৫০ জন ও বামদলের ৪ হাজার ৩৮১ জন প্রার্থী।
অন্যদিকে, জেলা পরিষদে তৃণমূলের ৬২১ জন, বিজেপির ৫৭৫ জন ও বাম দলের ৫৬২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ১৮ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সব মিলিয়ে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ৮ হাজার ৬৪০।
বিডি প্রতিদিন/১৪ মে ২০১৮/এনায়েত করিম