১৯ আগস্ট, ২০১৯ ১৭:০৬

'ইরান আঘাত হানা শুরু করলে শত্রুরা পালানোরও পথ পাবে না'

অনলাইন ডেস্ক

'ইরান আঘাত হানা শুরু করলে শত্রুরা পালানোরও পথ পাবে না'

ইরানের নৌ-বাহিনীর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেন খান জাদি বলেছেন, শত্রুদের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য তার বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, শত্রুরা ভাল করেই জানে শত শত মাইল দূর থেকে বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ জাহাজ এনে ইরানের সীমান্তের কাছে ভেড়ালেও ইরান যদি তাদের ওপর আঘাত হানা শুরু করে তাহলে তারা পালানোরও পথ পাবে না।

রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলের পানিসীমায় শত্রুদের প্রতিটি গতিবিধির ওপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করছি আমরা। আমাদের বিশাল পর্যবেক্ষণ টিম শত্রুর যুদ্ধজাহাজ ও ইলেক্ট্রনিক্স যুদ্ধ ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ নজরদারি অব্যাহত রেখেছে এবং তাদেরকে শেকলের মত ঘিরে ধরে আছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ। এ অঞ্চলে নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতে আমেরিকা ইরান বিরোধী যে সামরিক জোট গড়ে তোলার চেষ্টা করছে তারও উদ্দেশ্য এ অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি। এ অবস্থায় বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা আমেরিকা ও তার পাশ্চাত্য মিত্ররা কেন মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে এবং তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্যবা কি সেটাই এখন প্রশ্ন।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এ অঞ্চলে বিদেশিদের উপস্থিতির উদ্দেশ্য হচ্ছে, তেল  ও অন্যান্য সম্পদে পরিপূর্ণ আরব দেশগুলোর কাছে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্র তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, তেল ও গ্যাস সম্পদের অধিকারী আরব দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। কারণ বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ তেলের মজুদ এবং বিশ্বের এক চতুর্থাংশ গ্যাসের মজুদ রয়েছে আরব এই দেশগুলোতে। তেলই হচ্ছে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও সারা বিশ্বের সঙ্গে এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাআদ উল্লাহ যারেঈ এ ব্যাপারে বলেছেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতির আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার ঐক্য, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে ধ্বংস করে দেয়া। যা কিনা এ দেশগুলোর যৌথ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার পথে বিরাট হুমকি।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের উস্কানিমূলক তৎপরতার কারণে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ওমান সাগর ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো ইরানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে। এ কারণে ইরান প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতায় যৌথ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছে। ইরান আগাম হামলা না চালানোর ব্যাপারেও চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ কুয়েতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, কুয়েতের যুবরাজ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আগাম হামলা না চালানোর বিষয়ে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ে একটি সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তারা মতবিনিময় করেছেন।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এ অঞ্চলের সব দেশেরই জাহাজ চলাচলের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে। তাই কেবল এ দেশগুলোই পারে যৌথভাবে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরানসহ এ অঞ্চলের সব দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/১৯ আগস্ট, ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর