কাশ্মীরে একনায়কতন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিআই (এমএল) নেত্রী ও সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণান। গতকাল শুক্রবার কলকাতা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কাশ্মীরে ইন্টারনেট, মোবাইল পরিষেবা বন্ধ। রাতে বাড়িতে হানা দিয়ে কিশোরদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। গোটা রাজ্যের বিরোধী নেতারা বন্দি। কাশ্মীরে এভাবেই নরেন্দ্র মোদি সরকার কার্যত ‘সামরিক একনায়কতন্ত্র’ চালাচ্ছে।
কলকাতা প্রেসক্লাবে এদিন তাদের তৈরি ভিডিও রিপোর্ট ‘কাশ্মীর কেজড’ দেখানো হয়। তাতে উপত্যকার বিভিন্ন অংশের খণ্ডচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সম্বলিত ৩৭০ ধারা বাতিলকে কেন্দ্র করে নানা বিধিনিষেধের মধ্যে কবিতা কৃষ্ণান ছাড়াও অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ এবং সমাজকর্মী মাইমুনা মোল্লা ও বিমল ভাই সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন।
কবিতা কৃষ্ণান বলেন, ‘সরকারের অনেক কর্মকর্তা বলছেন কিছু দিন মোবাইল-ইন্টারনেট না চললে কী হয়েছে? কিন্তু ওই কারণে কাশ্মীরের অনেক গরিব মানুষের চিকিৎসা আটকে যাচ্ছে। কারণ, যে সরকারি প্রকল্পের অধীনে তাদের বিনা খরচে চিকিৎসা হতে পারে ইন্টারনেটের অভাবে চিকিৎসকরা সেই প্রকল্পের সাইটে লগইন করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। তার প্রশ্ন- ‘ভারতের অন্য রাজ্যে কী এভাবে কার্যত গোটা সমাজকে এক মাস ধরে আটকে রাখা সম্ভব? আমার ধারণা সেক্ষেত্রে জাতীয়স্তরে প্রবল হইচইয়ের জেরে সরকার বিপাকে পড়বে।’
কাশ্মীর থেকে ফিরে এর আগেও কবিতা কৃষ্ণান গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সেখানকার পরিস্থিতি একেবারে ভয়াবহ! কাশ্মীর সামরিক বাহিনীর দখলে রয়েছে। প্রত্যেক সড়ক, প্রত্যেক বাড়ির সামনে, প্রত্যেকটি মহল্লার মুখে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। অবস্থাটা সত্যিই অত্যন্ত উদ্বেগজনক! কারও কোনো কথা বলার সুযোগ নেই, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সুযোগও নেই।’
এদিকে, কাশ্মীরের অশান্তির পরিবেশ নিয়ে মন্তব্য করায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি, সমাজকর্মী ও গবেষক শেহলা রশিদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু করেছে দিল্লি পুলিশ।
তার বিরুদ্ধে ১২৪-এ ধারায় দেশদ্রোহিতা, ১৩৫-এ ধারায় শত্রুতায় প্ররোচনা, ১৫৩ ধারায় দাঙ্গায় উস্কানি, ৫০৪ ধারায় শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে এবং ইচ্ছাকৃত অপমানের উদ্দেশ্যে মন্তব্য, ৫০৫ ধারায় জনগণের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরির উদ্দেশ্যে মন্তব্যের মতো ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আলাখ অলোক শ্রীবাস্তবের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা হয়েছে। সূত্র : পার্সটুডে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক