৩ এপ্রিল, ২০২০ ২২:৫১

পাকিস্তানের এক ফাঁসির আসামির মুক্তি পেতে যাওয়ার গল্প ও ১৮ বছরের ইতিহাস

অনলাইন প্রতিবেদক

পাকিস্তানের এক ফাঁসির আসামির মুক্তি পেতে যাওয়ার গল্প ও ১৮ বছরের ইতিহাস

ড্যানিয়েল পার্ল ও ওমর শেখ (ডানে)

সন্ত্রাস দমনে আবারো ব্যর্থতার পরিচয় দিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ২০০২ সালে মার্কিন সাংবাদিককে অপহরণের পর হত্যার মাস্টারমাইন্ডার ও প্রধান আসামি ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আহমেদ ওমর সাইদ শেখকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। এই রকম একজন খুনিকে ফাঁসি না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া, সন্ত্রাসবাদ উস্কে দেয়া ছাড়া আর কিছু নয়।

জানা গেছে, আমেরিকার সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্ল এর খুনে অভিযুক্ত জঙ্গি আহমেদ ওমর ফাঁসির সাজা পেয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি আদালত তার এই ফাঁসির সাজাকে ৭ বছরের হেফাজতে বদলে দেয়। আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর ওই জঙ্গির খুব শীঘ্রই ছাড়া পাওয়ার কথা। এর পেছনে হাত রয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) ও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার (অব.) এজাজ আহমেদ শাহ। ১৮ বছর আগে ২০০২ সালে এই এজাজ আহমেদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন কিলার ওমর শেখ। তৎকালীন বিগ্রেডিয়ার এজাজই আজ আইএসএস’কে সাথে নিয়ে কলকাঠি নাড়ছেন ওমর শেখের মুক্তির পথ পরিষ্কার করতে। যার মাধ্যমে বেরিয়ে আসছে ১৮ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদকে লালন করার গল্প।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম বলছে, ওমর শেখ যেহেতু ১৮ বছর ধরে মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় জেলে ছিল, সে কারণে তার কারাবাসের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে ধরা হবে। আদালত এই মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আরও তিনজনকে মুক্তি দিয়েছে। চারজনকেই দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হবে।

এদিকে, জঙ্গি ওমর শেখের ছাড়া পাওয়ার খবর পাওয়ার পর আমেরিকার বিদেশ মামলায় হাউস কমিটির চেয়ারম্যান হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে পাকিস্তানকে সাবধান করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, পাকিস্তানের আদালত জঙ্গি ওমরের সাজা বদলে দিয়েছে, এটা খুবই চিন্তার বিষয়। এটা খুবই প্রয়োজন যে, পাকিস্তান নিজেদের সন্ত্রাসবাদ সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিবদ্ধতা দেখাক।

উল্লেখ্য, ৩৮ বছরের ড্যানিয়েল পার্ল একজন আমেরিকান সাংবাদিক ছিলেন। তিনি ছিলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান। ২০০২ সালে পাকিস্তানের করাচি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। সে সময়ে আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের উপর প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিলেন।

পার্লের শিরশ্ছেদের ভিডিও এক মাস পর করাচির মার্কিন দূতাবাসে পাঠানো হয়। সারা দুনিয়ায় ওঠা প্রতিবাদের ঝড়ের সাপেক্ষে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ তখন ওমর শেখসহ আরও তিন জঙ্গিকে সে বছরেই গ্রেফতার করে। পরে পার্লের অপহরণ ও খুনের দায়ে পাকিস্তানের আদালত তাদের সাজা দেয়। সূত্র : জি ‍নিউজ।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর