১০ এপ্রিল, ২০২০ ১৬:৩৫

চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সারা বিশ্বের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে চীন

অনলাইন ডেস্ক

চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সারা বিশ্বের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে চীন

প্রতীকী ছবি

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কে গোটা বিশ্ব। ঠিক সেইসময় বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল কানাডার সফটওয়্যার সংস্থা ব্ল্যাকবেরি। চীনা সরকারের হয়েই দেশটির হ্যাকাররা অনলাইনে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

চলতি সপ্তাহে ব্ল্যাকবেরির পক্ষ থেকে ৪০ পাতার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনের ছদ্মবেশে বিভিন্ন কম্পিউটারে ঢুকে পড়ে চীনা হ্যাকাররা। এতটাই উন্নত তাদের প্রযুক্তি, যে কম্পিউটারের ফায়ারওয়ালেও তারা ধরা পড়ে না। আর সেই সুযোগেই কম্পিউটারে মজুত রাখা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় তারা। 

২০১২ সালের মার্চ থেকে সরকারি মদতে চীনা হ্যাকাররা এই গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে আসছে বলে দাবি করেছে ব্ল্যাকবেরি। তবে সাধারণ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে আঘাত না হেনে, বিশ্বের তাবড় সংস্থা, সরকারি ডেটাবেস সার্ভার এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫০০ সুপারকম্পিউটারগুলোতে যে লিনাক্স অপারেটিং প্রযুক্তিতে কাজ হয়, বেছে বেছে সেগুলোতেই আঘাত হানা হয়। 

ব্ল্যাকবেরির গবেষকদের দাবি, উইন্ডোজের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ বলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, গবেষণা লিনাক্সের মাধ্যমেই সুরক্ষিত রাখা হয়। কিন্তু সমস্যা হলো, লিনাক্স একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম। অর্থাত্‍ এই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করছে, কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এতে, তা বাইরে থেকে দেখা সম্ভব। তাই নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে সহজেই চীনা হ্যাকাররা তথ্য হাতিয়ে নিতে পেরেছে।

অনলাইনে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া এই ধরনের পাঁচটি অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট থ্রেট (এপিটি) সংগঠনের হদিশ পেয়েছে ব্ল্যাকবেরি। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমেও ম্যালওয়্যার ছড়িয়েছে তারা। বলা হয়েছে, শুরুতে বিভিন্ন ভিডিও গেম সংস্থার থেকে চুরি করা সার্টিফিকেট নিয়ে ম্যালওয়্যার ছড়ানো হতো, র্বতমানে অ্যাডওয়্যার ভেন্ডরদের সার্টিফিকেট চুরি করে ম্যালওয়্যার ছড়ানো হচ্ছে। ম্যালওয়্যার ছড়ানো হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোতেও।

এই পাঁচটি সংস্থার সঙ্গে চীনা সরকারের যোগসাজশ খুঁজে পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে ব্ল্যাকবেরি। তবে চীন সরকার যে এই যোগসাজশের কথা কখনোই স্বীকার করবে না, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত তারা। তাদের দাবি, সরাসরি নিজেদের লোক লাগিয়ে এই কাজ করায়নি চীনা সরকার। বরং বেশ কিছু কন্ট্র্যাক্টরকে বরাত দিয়ে গোটা অপারেশনটি চালানো হয়েছে।

তবে চীন সরকারের মদতে হ্যাকাররা নীরবে এই ধরনের ঘটনা যে ঘটিয়ে চলেছে, এ বছর ফেব্রুয়ারিতেই তার ইঙ্গিত দেয় মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। ওয়াশিংটনে 'চায়না ইনিশিয়েটিভ কনফারেন্স' চলাকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল পি বার জানান, গবেষণার নামে কমবয়সী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্বজুড়ে সাইবার অনুপ্রবেশ চালাচ্ছে চীন সরকার।

এর আগে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে চীনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তোলেন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস। সেইসময় তিনি বলেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে বছরের পর পরিশ্রম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সমস্ত আবিষ্কার করেছে, মুহূর্তের মধ্যে তা চুরি করে নিতে সক্ষম হ্যাকাররা। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর