ভেনেজুয়েলায় মার্কিন বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যে ‘বর্ধিত সামরিক তৎপরতা’র ঝুঁকি সম্পর্কে মার্কিন বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সতর্ক করার পর শনিবার ছয়টি বিমান সংস্থা ভেনেজুয়েলায় তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছে বলে জানা গেছে।
একটি শিল্প গোষ্ঠীর বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলার এয়ারলাইন্স অ্যাসোসিয়েশনের (এএলএভি) সভাপতি মারিসেলা ডি লোইজা বলেছেন, স্পেনের আইবেরিয়া, পর্তুগালের টিএপি, চিলির ল্যাটাম, কলম্বিয়ার আভিয়ানকা, ব্রাজিলের জিওএল এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ক্যারিবিয়ান দেশটিতে তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
তবে তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি ফ্লাইট কতক্ষণ স্থগিত থাকবে।
পানামার কোপা এয়ারলাইন্স, স্পেনের এয়ার ইউরোপা এবং প্লাসআল্ট্রা, টার্কিশ এয়ারলাইন্স এবং ভেনেজুয়েলার লেজার আপাতত ফ্লাইট পরিচালনা চালিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভেনেজুয়েলার আকাশসীমায় বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
কারণ, সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সতর্কতার মূল কারণ হলো ভেনেজুয়েলা ও এর আশেপাশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এবং সামরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি, যা বিমানের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিমান সংস্থাগুলোকে এই পরিস্থিতিতে সতর্কতার সাথে ফ্লাইট পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে একটি বিমানবাহী রণতরী, অন্যান্য নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এবং স্টিলথ বিমান পাঠিয়েছে। তাদের মতে, মাদক পাচার রোধ করার লক্ষ্যে এই যুদ্ধজাহাজ এবং সেনা মোতায়েনের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু কারাকাসে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যেই যুদ্ধজাহাজ এবং সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ভেনেজুয়েলার বামপন্থী নেতা নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বে থাকা একটি মাদক চক্রের জন্য সোমবার থেকে মার্কিন সন্ত্রাসবাদের তালিকা কার্যকর হচ্ছে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা কেউ কেউ মনে করেন যে তার সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিতে পারে।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ওয়াশিংটনের বাহিনী ক্যারিবিয়ান সাগর এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে ২০টিরও বেশি মাদক চোরাচালানকারী জাহাজের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। এই হামলার ফলে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি যে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা জাহাজগুলো মাদক পাচারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে বা দেশের জন্য হুমকি ছিল। মার্কিন হামলা এবং তার সাথে সেনা মোতায়েনের ফলে আঞ্চলিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম