চীন প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণের কৌশল নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে দেশটির তিব্বতের শানান অঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ নির্মাণ করছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশটি ১২০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম এমন একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্পটি দেশটির সালউইন, মেকং, ইয়াংজি এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকায় নির্মিত হবে। এছাড়াও দেশটি সিন্ধু নদীর অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণে পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে চীন কয়েকটি বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। আরও কয়েকটি বাঁধের নির্মাণ কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হবে।
ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর দেশের সবচেয়ে বড় এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছে চীন। তিব্বতের শানান অঞ্চলে অবস্থিত এই প্রকল্পটির নাম জাংমু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি হবে চীনের বৃহত্তম থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়ে তিন গুণ বড়। এখানে উৎপাদিত হবে ৬০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ।
এই প্রকল্পগুলোর কারণে নদীর পানিপ্রবাহ, গতি ও দিকের বড় পরিবর্তন হতে পারে। পাশাপাশি চীন খুব সহজেই নদীর পানি ধরে রাখতে এবং এর গতিপথ বদলিয়ে দিতে পারে।
সন্দেহের কোনো কারণ নেই এই প্রকল্পগুলোর জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যদিও চীন এই উদ্বেগের কারণ নেই বলে জানিয়েছে। তবে বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চীনা উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলোর অপ্রতিরোধ্য সম্প্রসারণ এই উদ্বেগকে বাড়িয়ে তুলেছে।
কারণ চীন মেকং নদীতে যে ১১টি বড় জলকাঠামো তৈরি করেছে, সেসব নিয়ে ভাটিতে থাকা মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের ভোগান্তিতে পড়েছে। এসব দেশকে চাপে রাখতে দেশটি মেকং নদীর পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
এদিকে নতুন এসব বাঁধগুলোর কারণে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের বড় বড় নদীগুলোতে পানির প্রবাহ কমে যাবে। আর বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানির কারণে বন্যায় কবলিত হবে।
মূলত এসব কাঠামো নির্মাণের পেছনে চীনের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল কাজ করছে। ভাটি অঞ্চলের দেশগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশটি পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর