নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী পাকিস্তানি নারী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের বিয়ের খবরটি বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যমেই ছিল এক বড় ঘটনা। আর ফেসবুক-টুইটারের মত সামাজিক মাধ্যমে এটি ছিল অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়।
ব্রিটেনের বার্মিংহ্যাম শহরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে মালালা ইউসুফজাই ও আসার মালিকের বিবাহ সুসম্পন্ন হয়েছে। আসার মালিক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একজন কর্মকর্তা।
এর আগে গত জুন মাসে ব্রিটিশ 'ভোগ' সাময়িকীকে দেয়া সাক্ষাতকারে মালালার সেই উক্তিটি বার বার উদ্ধৃত হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই সেই পাতাটির স্ক্রিনশটও দিয়েছেন।
তাতে মালালা বলেছিলেন, "আমি এখনো বুঝতে পারি না যে মানুষকে বিয়ে করতে হবে কেন। যদি আপনি একজন মানুষকে জীবনসংগী করতে চান, তার জন্য কেন বিয়ের দলিলে সই করতে হবে, কেন এটা শুধুই একটা পার্টনারশিপ হতে পারবে না?"
জুন মাসে করা মালালার এই উক্তি প্রকাশিত হয়েছিল ভোগ সাময়িকীর জুলাই সংখ্যায়। তার পর ছয় মাস পার না হতেই তিনি নিজেই বিয়ে করে ফেললেন ।
মালালার এই 'স্ববিরোধী কাণ্ড' দেখে তসলিমা নাসরিনসহ বেশ কয়েকজন নারীবাদী প্রশ্ন তুলেছেন। তাকে নিয়ে চলছে ট্রোল। আর এসব প্রতিক্রিয়ার বেশিরভাগই নেতিবাচক।
নিজের সেই মন্তব্য এবং ৪ মাস পর পরিবর্তন করার বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন মালালা।
নববিবাহিত এই নোবেল বিজয়ী ফ্যাশনবিষয়ক জনপ্রিয় সাময়িকী ভোগের এক নিবন্ধে মালালা বলেছেন, '২০১৮ সালে আমাদের দেখা হওয়ার পর ধীরে ধীরে আমরা ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে পড়ি। আমাদের মূল্যবোধে মিল ছিল। দুজনের সঙ্গও উপভোগ করছিলাম। সুখ-দুঃখের সময়গুলো পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কাটিয়েছি। জীবনের ওঠা-নামায় আমরা দুজন দুজনের কথা শুনেছি।'
মালালা আরও বলেছেন, 'আমি বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমি প্রথাটি নিয়ে সর্তক ছিলাম। আমি পুরুষতান্ত্রিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। পাশাপাশি বিয়ের পর নারীদের নানা বিষয়ে আপসের প্রস্তুতি নিতে হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিয়েসংক্রান্ত আইনগুলোতে সাংস্কৃতিক প্রথা ও নারীবিদ্বেষী মনোভাবের প্রভাব পড়ে তা নিয়ে কথা বলেছিলাম। সব প্রশ্নের জবাব হয়তো আমার কাছে নেই। তবে বিবাহিত জীবনে আমি বন্ধুত্ব, ভালোবাসা ও সমঅধিকার উপভোগ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।'
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন