রাশিয়া ও ইউক্রেন নতুন বছরে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছে। খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এমন বিষয় উঠে আসে।
রাশিয়া বলছে, তাদের পিতৃভূমির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই এই যুদ্ধ। অন্যদিকে ইউক্রেন বলছে, এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই।
অন্যান্য বছর ক্রেমলিনে কোনো কক্ষে বসে নতুন বছরের ভাষণ দিলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবার নিজের দুই পাশে সেনাদের নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। যুদ্ধের ময়দানে রুশ বাহিনীর পিছু হটা নিয়ে সমালোচনা থাকলেও সেনাদের ধন্যবাদ জানান পুতিন। একই সঙ্গে সেনাদের বলেন, আরও বেশি কিছু করতে হবে।
ধূসর স্যুট–টাই পরা পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে বলেন, (এই যুদ্ধের) প্রধান বিষয়টি হলো রাশিয়ার ভাগ্য। পিতৃভূমি রক্ষা করা পূর্বসূরি ও উত্তরসূরিদের কাছে আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। নৈতিক ও ঐতিহাসিক অবস্থান থেকে ন্যায়ের যে কথা বলা হয়, সেটিও আমাদের পক্ষে।
রাশিয়াকে ধ্বংসের অপচেষ্টায় পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে মন্তব্য করে পুতিন বলেন, রাশিয়া এটা কখনোই হতে দেবে না। যুদ্ধ সম্পর্কে আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, আমাদের এই যুদ্ধ চলবে। আমরা সব সময় এটা জেনে এসেছি এবং আজও এ বিষয় আমরা একমত যে স্বাধীন, সার্বভৌম ও নিরাপদ রাশিয়া নির্ভর করছে আমাদের ইচ্ছা ও শক্তির ওপর।
অন্যদিকে ১৭ মিনিটের ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল যে আত্মসমর্পণ ছাড়া তোমাদের কোনো পথ নেই। আমরা বলছি, জয় ছাড়া আমাদের হাতেও কোনো বিকল্প নেই। পুরো দেশ এক হয়ে আমরা লড়াই করছি।’ ইউক্রেনজুড়ে রুশ বাহিনীর বিভিন্ন হামলার ভিডিও চিত্রও দেখানো হয়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোগুলোয় রুশ বাহিনীর একের পর এক হামলার কারণে অন্ধকার ও ঠান্ডায় দিনের পর দিন কাটিয়েও যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনীয়দের প্রশংসা করেন জেলেনস্কি। দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, এই বছরটি (২০২২) আমাদের হৃদয়ে ক্ষত হয়ে থেকে যাবে। কাঁদতে কাঁদতে আমাদের চোখের পানি ফুরিয়ে গেছে। আমরা চিৎকার করে সব রকম প্রার্থনা করেছি। এটা ভুলে যাওয়া অসম্ভব। ক্ষমা করে দেওয়াও অসম্ভব। তবে আমরা লড়াই করেছি এবং এ লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের এই লড়াই একটি শব্দের জন্য। সেটি হলো বিজয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল