সিরিয়া ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মৃতের সংখ্যা ৪০ হাজারে ঠেকতে খুব একটা বাকি নেই। সেই অসংখ্য ক্রন্দন ধ্বনির মাঝে কিছু সুখের খবরও আছে। ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়া কেউ কেউ পেয়েছেন নতুন জীবন।
সাক্ষাৎ মৃত্যুর কাছ থেকে বেঁচে ফেরা সেই মানুষেরাই দিয়েছেন ভূমিকম্পের রোমহর্ষক বর্ণনা। নেকলা কামুজ নামের নারীও তাদেরই একজন। ২৭ জানুয়ারি তিনি তার দ্বিতীয় পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। আর সেই সন্তানের বয়স ১০ দিন হতেই চাপা পড়লেন ধ্বংসস্তুপের নীচে। পুত্রের নাম রাখা হয়েছিল ইয়াগিজ। যার অর্থ সাহসী।
স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পাঁচ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন নেকলা। ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে সেই সুন্দর থাকার জায়গাটিই ভূমিকম্পের আঘাতে তছনছ হয়ে যায়। ধ্বংসস্তুপ নেকলা পরিবারকে ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ। তার স্বামী ছিলেন অন্য কক্ষে, তিনি পাশেরটিতে।
ভূমিকম্পে তারা দুই জন দুই ঘরে আটকা পড়েন। দুই ছেলেও থাকে দুজনের কাছে। কেউ কারো কাছে পৌঁছাতে পারছিলেন না দেয়ালগুলো ভেঙে পড়ায়।
সবশেষ ৩৩ বছর বয়সী নেকলা নিরুপায় হয়ে নবজাতক শিশুটিকে বুকে আগলে ধরে শুয়ে পড়েন ধংসস্তুপের মাঝেই। একটা ওয়াড্রব দেয়াল আর তাদের মাঝে রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়ায়।
এভাবে কেটে যায় প্রায় চার দিন। নেকলার বেঁচে ফেরার আসাও ক্ষীণ হয়ে আসছিল।
তবে হতাশার অন্ধকারের মাঝেই আলো ফেললো একটা উদ্ধারকারী কুকুরের ডাক। প্রশিক্ষিত কুকুরটি ডাকের মাধ্যমেই ধ্বংসস্তুপে করছিল প্রাণের সন্ধান। আর সেই শব্দেই আটকা পড়ার ৯০ ঘণ্টা পর নেকলার আশার সলতেও জ্বলে ওঠে।
এরপর শুনতে পান কেউ তার কাছে জিজ্ঞেস করছে, ‘আপনি ঠিক আছেন তো?’ সাড়া দেন নেকলা। উদ্ধারকারীরা তাকে ও তার শিশু সন্তানকে পরম যত্নে ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করে। পরে নেকলা জানতে পারেন তার স্বামী ও আরেক সন্তানকেও জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল