বিচারবিভাগের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চুপিসারে সংশোধনী আনছে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন— এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল ইসারায়েলে।
সোমবার পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার মানুষ। কারও হাতে ছিল দেশের পতাকা। কেউ আবার হাতে তুলে নিয়েছিলেন ‘ইসরায়ালে গণতন্ত্রকে রক্ষা করুন’ কিংবা ‘গোটা বিশ্ব দেখছে’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
পার্লামেন্টে প্রাথমিক স্তরের ভোটাভুটির মাধ্যমে অনেকটাই এগিয়ে গেছে বিচারবিভাগের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণবৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া। এমনকি প্রায় অনুমোদন প্রাপ্তির দিকে পৌঁছে গেছে সেই প্রক্রিয়া। আর এই বিষয়টি প্রকাশ্যেই আসতেই অশান্ত হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। কারণ এই সংশোধনী কার্যকর হলে পার্লামেন্টের হাতে অবাধ ক্ষমতা চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে, যা নিজেদের ইচ্ছে মতো ব্যবহার করতে পারবে প্রশাসন।
এই সংক্রান্ত বিলটি যাতে অনুমোদনের জন্য পেশ না করা হয় সেজন্য আর্জি জানিয়েছেন স্বয়ং দেশের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগও। তিনি বলেন, “আমার আর্জি, দয়া করে এই বিলটিকে প্রথম দফার অনুমোদনের দিকে ঠেলে দেবেন না।”
যদিও প্রায় আনুষ্ঠানিক পর্যায়ের এই পদে বসে করা হারজগের এই আর্জিকে খুব একটা আমল দিতে নারাজ অতি-দক্ষিণপন্থী নেতানিয়াহু প্রশাসন। জানা গেছে, আইনমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কমিটির কাছে যে অনুমোদন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল তারা ইতোমধ্যেই তা পর্যালোচনা করে কয়েকটি ভাগে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, দিনের দ্বিতীয় ভাগে পুরো বিলটি প্রথম স্তরের অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
নেতানিয়াহু ও তার সহযোগীদের দাবি, এই সংশোধনীর ফলে সুপ্রিম কোর্ট এবং নির্বাচিত সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষমতার ফারাক কমবে। তবে বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এতে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর কথা বলার ক্ষমতাও আসবে পার্লামেন্টের হাতে। এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন ইসেরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট এস্থার হায়ুত-সহ আরও অনেক বুদ্ধিজীবী। সকলেরই মত, এই সংশোধনী বিচারবিভাগের স্বাধীনতার চরম অপমান। বিরোধীদের দাবি, এটা ফ্যাসিবাদী সরকারের লক্ষণ। তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯৩০-এর দশকে জার্মানিতে হিটলারও ঠিক একই পথে হেঁটেছিলেন। সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/কালাম