ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহরে রুশ বাহিনীকে প্রতিরোধে শহরের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। এই সেনাদের মুখে বাখমুতের ভয়াবহ পরিস্থিতির কাহিনী উঠে এসেছে। এএফপির সাংবাদিকেরা এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখেছেন। ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে শহরটি পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছিলেন তারা।
এই সাংবাদিকরা বলেন, বাখমুতের আবাসিক ভবনগুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বেসামরিক মানুষের কবর দেখে বোঝা যায়, তাড়াহুড়া করেই কবরগুলো দেওয়া হয়েছে।
এএফপির সঙ্গে কথা বলেছেন বাখমুতে ইউক্রেনের একটি সেনা ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কমান্ডার। ফিলোসফার’ (দার্শনিক) পরিচয় দেওয়া এই কমান্ডার বলেন, রুশ বাহিনী দিন কিংবা রাত কোনো সময় হামলা বন্ধ করে না। আমরা যখন তাদের ওপর হামলা চালাই, শুধু তখন তারা নিজেদের হতাহত সেনাদের সরিয়ে নিতে ব্যস্ত থাকে। এ সময় শুধু তাদের হামলা বন্ধ থাকে।
ধীরে ধীরে রুশ সেনারা পুরো বাখমুত দখল করে নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। আমাদের সেনারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে’।
ইউক্রেনের সেনাসদস্য আন্দ্রি বলেন, ‘হাতে যা কিছু আছে তার সব আমাদের দিকে ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।’ তিনি বলেন, আপনি যদি এই রাস্তাটি ধ্বংস করে দেন, তাহলে বাখমুতের সবাই মারা যাবে। কোনো কিছু সরবরাহ করা যাবে না। কোনো গোলাবারুদ, খাবার—কিছুই থাকবে না। শহরটি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।’
বাখমুতে যেটুকু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেটুকু টিকিয়ে রাখা ইউক্রেনীয়দের জন্য জরুরি। কারণ, এই এলাকায় একটি মাত্র সড়ক রয়েছে, যেটি দিয়ে ইউক্রেন বাহিনীর কাছে প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করা হচ্ছে।
শঙ্কার কথা হলো এই সড়কের অনেক কাছাকাছি এসে পড়েছেন রুশ সেনারা। ইউক্রেনের সেনাসদস্য আলেক্সান্দার সড়কে একটি গাড়িতে বসে আঙুলের ইশারায় দেখালেন, মাত্র ৯০০ মিটার দূরেই রুশ বাহিনী অবস্থান নিয়েছে। ফলে যেকোনো সময় সড়কটি তাদের দখলে চলে যেতে পারে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, বাখমুত দখলে রাখার কৌশলগত গুরুত্ব খুবই কম। তবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ব্যাপক। বিশ্লেষকদের মতে, সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো, বাখমুতের লড়াইয়ে যে পক্ষ শক্তিমত্তার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে, তারাই এ যুদ্ধে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল