যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে থাকা বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যগুলো নিরাপত্তামূলক সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
নেভাদা, ওরেগন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। নেভাদার লাস ভেগাসে ভোট তালিকাভুক্তি কেন্দ্রের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়েছে।
একই সঙ্গে, অ্যারিজোনায় সম্ভাব্য সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ ড্রোন ও স্নাইপার মোতায়েন করেছে। নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তত তিনটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ন্যাশনাল গার্ড সেনা তলব করেছেন।
আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলমান। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। নির্বাচনের দিন ও পরবর্তী সময়ে দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁরা বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন। বিশেষ করে, এমন অঙ্গরাজ্যগুলোতে দৃশ্যমান নিরাপত্তা পদক্ষেপ বৃদ্ধি করা হয়েছে যেখানে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। এই অঙ্গরাজ্যগুলোই মূলত নির্ধারণ করবে, কে হবেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
নেভাদা একটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। এখানে ২০২০ সালের নির্বাচনের পর ট্রাম্পের সমর্থকদের বিক্ষোভ হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, লাস ভেগাসে ভোট তালিকাভুক্তির কেন্দ্র (টেবুলেশন সেন্টার) ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। নেভাদার গভর্নর জো লম্বার্ডো গত সপ্তাহে জানান, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে ন্যাশনাল গার্ডের ৬০ সদস্যের একটি সীমিত দল মোতায়েন করা হয়েছে।
অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্সের মারিকোপা কাউন্টি ভোট তালিকাভুক্ত কেন্দ্রেও কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে এই এলাকায় নির্বাচনী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকির ঘটনা ঘটেছিল। সে কারণে এবার ভোট কেন্দ্রের চারপাশে নিরাপত্তা বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। মারিকোপা কাউন্টির পুলিশ কর্মকর্তা রাস স্কিনার জানিয়েছেন, তাঁর বিভাগ হুমকি ও সহিংসতার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তিনি তাঁর সদস্যদের দায়িত্ব পালনের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, এবং মাঠপর্যায়ে তাঁদের সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত সদস্য ও প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জামও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রাস স্কিনার বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটদানের স্থানগুলোর চারপাশে কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে ড্রোন ব্যবহার করবেন। সহিংসতা দেখা দিলে তা মোকাবিলার জন্য স্নাইপার প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া মোতায়েনের জন্য বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য প্রস্তুত থাকবে।
রাস স্কিনার আরও বলেন, নির্বাচনের পরের দিনগুলোয় ‘মেরুকরণ’ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। তাই আইন প্রয়োগকারীরা কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করবেন। অপরাধমূলক কার্যকলাপ–সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে তাঁরা শূন্য সহনশীলতা দেখাবে।
অ্যারিজোনার নির্বাচনী কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিক্ষোভ বা সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ থেকে অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুল ও গির্জা এবার ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অতীতে এগুলো ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/মুসা