জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের পরই ডেমোক্রেট শাসিত রাজ্যগুলি দাবি করেছিল, এটি মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর পরিপন্থী। এছাড়া এই সংক্রান্ত ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্ট আগেও একাধিক রায় দিয়েছে তাই এটা প্রতিষ্ঠিত যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া একটা শিশুর অধিকার।
দ্বিতীয়বারের মতো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রম্পের এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে একযোগে ২২টি মার্কিন প্রদেশ মামলা করেছিল। এরই মাঝে ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিলো আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে বিচারক জন কফেনর এই সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ কার্যকর হওয়া ১৪ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে।
আদালতে এক শুনানির সময় বিচারক জন কফেনর বলেছেন, ‘এটি স্পষ্টভাবেই একটি অসাংবিধানিক আদেশ।’
বিচারক জন কফেনরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্থ হচ্ছে, যেই দেশটিতে জন্মাবে, সে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে যাবে। এই নীতি বদলাবেন বলে অনেক দিন ধরেই ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন। ক্ষমতায় বসে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপও নেন। আদালত ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ ১৪ দিনের জন্য রুখে দিয়েছেন।
ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী শুধু আমেরিকায় জন্মালেই নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে না আর। শিশু মা কিংবা বাবাকে মার্কিন নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিন কার্ড হোল্ডার) হতে হবে। তবেই নবজাতক আমেরিকার নাগরিকত্ব পাবে।
এদিকে, বিচারকের এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার দেওয়া নির্বাহী আদেশের পক্ষে লড়াই করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও। নির্বাহী আদেশটি সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওই আদেশে মার্কিন সংবিধানের ‘সঠিক ব্যাখ্যা’ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশের পর মামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি অঙ্গরাজ্য, দুটি শহর এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বেশ কয়েকটি সংগঠন। এরপর গতকাল আদেশটি সাময়িক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আইনের আশ্রয় নেওয়া অঙ্গরাজ্যগুলো।
এ বিষয়ে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ক্রিস মায়েস বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্টই নিজের ইচ্ছামতো সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেন না। আজকের (আদালতের) সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হলো।’ আর ওয়াশিংটনের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশটি ‘আমেরিকার সঙ্গে যায় না’। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজিম