মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অন্যান্য দাতাদের সহায়তা হ্রাসের ফলে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের শত শত কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১ মে) জেনেভায় জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদর দপ্তরের সামনে সংস্থাটির কয়েকশ কর্মী বিক্ষোভ করেছেন।
‘শান্তির শহর’ নামে পরিচিত সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ইউরোপের মানবিক ও কূটনৈতিক কেন্দ্র। কর্তৃপক্ষের মতে, এই খাতে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ কর্মরত।
জাতিসংঘ এবং এর বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলো থেকে জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে যোগ দেয়া কর্মীরা ‘এখনই জাতিসংঘের কর্মীদের ছাঁটাই বন্ধ করুন’ লেখা ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। ‘জাতিসংঘের কর্মীরা পণ্য নয়’ স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। জাতিসংঘের কর্মীরা জানিয়েছেন, ১ মে থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারেও ছোট আকারের বিক্ষোভ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম এর মতো কিছু সংস্থার স্বল্পমেয়াদী ঠিকাদার এবং কর্মীদের এরই মধ্যে ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আরো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় রয়েছেন।
বিভিন্ন দেশের সহায়তা তহবিলের উপর নির্ভরশীল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতো সংস্থাগুলোতে সবচেয়ে বড় ছাঁটাই হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এসব সংস্থায় সবচেয়ে বড় দাতা দেশ ছিল।
মানবাধিকার আইনজীবী অ্যান কুইপার্স বলেন, ‘তারা আমাকে রাখার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসে কুইপার্সের অস্থায়ী চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এ কারণে আমরা এখন এই পরিস্থিতিতে: নিয়োগ স্থগিত, কোনো বাজেট নেই।’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও-র স্টাফ ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন সেভেরিন ডেবুস জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে অন্তত ২৫০ জন আইএলও কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কিভাবে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো। সবচেয়ে জটিল এবং অত্যন্ত চাপের বিষয় হলো, এখানে কোনো প্রকৃত নিরাপত্তা বলয় নেই।’ কিছু কর্মী সুইজারল্যান্ডের বেকার ভাতাও পাবেন না এবং তাদের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের এক কর্মী গ্রেস জানিয়েছেন, সংঘাতে আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য কখনো কখনো তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করেছেন। এমন কর্মীদের পক্ষে কথা বলাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে নিজের পুরো নাম তিনি প্রকাশ করতে চাননি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সবার পক্ষে দাঁড়ায়, কিন্তু জাতিসংঘের পিছনে থাকা কর্মীদের পক্ষে কেউ দাঁড়ায় না।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত