ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ফিলিস্তিনিদের হত্যার ঘটনায় স্বাধীনভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, রবিবার গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিহত ও আহত হওয়ার খবরে আমি মর্মাহত। আমি এ ঘটনার তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি এবং দোষীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে গাজায় ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে ক্ষুধার্ত ও অনাহারি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২০০ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। মিডল ইস্ট মনিটর এর উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া এ খবর জানায়।
রবিবার ভোরে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় ত্রাণ সহায়তা গ্রহণের জন্য জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনির ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজার তথাকথিত ত্রাণ কেন্দ্রগুলো ইসরায়েলি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গণহত্যা চালাতে ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণের নামে নতুন কৌশল কাজে লাগাচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস বলছে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাদ্য সংগ্রহের জন্য আসা মানুষের ওপর প্রায় ১,০০০ গজ দূর থেকে হামলা চালানো হয়। হামলার স্থলটি ছিল একটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে, যা একটি ইসরায়েল-সমর্থিত সংস্থা পরিচালনা করে।
গাজার বাসিন্দা আমর আবু তাইবা বলেন, চারদিক থেকে গুলি চালানো হচ্ছিল—নৌযান, ট্যাঙ্ক এবং ড্রোন থেকে। তিনি জানান, কমপক্ষে ১০টি মৃতদেহ তিনি নিজে দেখেছেন, যাদের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল। এছাড়াও বহু নারীসহ আহতদের দেখতে পান তিনি। আমর আবু তাইবা বলেন, দৃশ্যটা খুবই ভয়াবহ ছিল। মানুষ গাড়ির মতো ব্যবহারযোগ্য গাড়ি ও হাতগাড়ি দিয়ে মৃত ও আহতদের মাঠের একটি অস্থায়ী হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল।
তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ঘটনাস্থলে বা তার আশেপাশে কোনো বেসামরিক নাগরিকের ওপর গুলি চালায়নি। প্রাথমিক তদন্তে তাদের পক্ষ থেকে এরকম কোনো আক্রমণের প্রমাণ মেলেনি বলে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম