থাইল্যান্ডে সিংহের আক্রমণে এক চিড়িয়াখানার পরিচর্যাকারী নিহত হয়েছেন। বুধবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাঙ্ককের সাফারি ওয়ার্ল্ডে। এ ঘটনায় সাফারি পার্কটির সুরক্ষা ব্যবস্থা ও সিংহ পালনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
থাইল্যান্ডের জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী সুরক্ষা পরিচালক সাদুদি পুনপুগডি এএফপিকে বলেন, নিহত চিড়িয়াখানার কর্মী নিয়মিত সিংহদের খাবার দিতেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে পড়লে প্রায় ছয় বা সাতটি সিংহ একসঙ্গে তাকে আক্রমণ করে।
আক্রমণের প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসক ও দর্শনার্থী তাভাচাই কানচনারিন স্থানীয় থাইরাথ টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমি একজন লোককে খোলা গাড়ি থেকে নেমে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি, পশুগুলোর দিকে পেছন ফিরে। বিষয়টি আমার অদ্ভুত মনে হয়েছিল। প্রায় তিন মিনিট তিনি দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি সিংহ ধীরে ধীরে এসে পেছন থেকে তাকে ধরে ফেলে। তিনি কোনো শব্দও করতে পারেননি।’
প্রাণী সুরক্ষা সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন থাইল্যান্ডের এডউইন উইক ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা নিহত প্রাণী পরিচর্যাকারীর প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি। এ ঘটনা আমাদের কঠোরভাবে মনে করিয়ে দেয়, জন্ম থেকে মানুষ লালন করলেও এ ধরনের প্রাণী যেকোনো সময় মানুষের জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
চিড়িয়াখানার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পার্কের সব সিংহই বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নিয়ম রয়েছে এবং আমরা বারবার সবাইকে তা মনে করিয়ে দিই, কারণ আমরা বিপজ্জনক প্রাণীর সঙ্গে কাজ করি।’
ওই কর্মকর্তা জানান, নিহত ব্যক্তি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছিলেন এবং তিনি ছিলেন ‘একজন সদালাপী মানুষ’।
সাফারি ওয়ার্ল্ডের ওয়েবসাইটে বলা আছে, ‘এখানে দর্শনার্থীরা বাঘ, সিংহ, ভালুক ও জেব্রার মতো বন্য প্রাণীর কাছাকাছি যেতে পারেন, যেগুলো তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে অবাধে ঘোরাফেরা করে। সেখানে দর্শনার্থীদের জন্য জনপ্রতি প্রায় এক হাজার ২০০ বাথ (৩৭ ডলার) দিয়ে সিংহ ও বাঘকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
থাইল্যান্ডে সিংহ পালন বৈধ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে বন্দি সিংহের সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বর্তমানে প্রায় ৫০০ সিংহ বিভিন্ন চিড়িয়াখানা, প্রজননকেন্দ্র, পোষা প্রাণীর ক্যাফে ও ঘরে নিবন্ধিত রয়েছে।
সূত্র : এএফপি
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ