ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনায় হামাসের আংশিক সম্মতির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তির জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে এখন প্রস্তুত ইসরায়েল।
শনিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইসরায়েলের নীতি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার দলের সঙ্গে 'পূর্ণ সহযোগিতায় কাজ করব'। তবে বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজায় বোমাবর্ষণ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি, যদিও জিম্মিদের নিরাপদ মুক্তির জন্য এই পদক্ষেপকে অপরিহার্য বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কিন্তু ট্রাম্পের গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানানোর পরও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা। জানা গেছে, হামাস সমঝোতায় রাজি হওয়ার পরও ট্রাম্পের বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। হামলায় শনিবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল বলেছেন, এটা একটা ভয়াবহ রাত ছিল, যেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা শহর ও উপত্যকার অন্যান্য এলাকায় ডজন ডজন বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালায়, যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এদিকে, হামাসের জবাবের পর ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির শীর্ষ জেনারেলদের সঙ্গে 'পরিস্থিতির বিশেষ মূল্যায়নে বৈঠক' করেছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির আইডিএফকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী জামির আইডিএফকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে জিম্মিদের মুক্তি কার্যকর করার প্রস্তুতি নিতে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় শুক্রবার হামাস ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার জবাব দেয়। এতে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট সরকারের হাতে শাসন ব্যবস্থা হস্তান্তরে সম্মতি জানায় গোষ্ঠীটি।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির এই প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মহাসচিব হামাসের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এতে উৎসাহিত হয়েছেন। ডুজারিক বলেন, মহাসচিব সব পক্ষকে গাজায় চলমান সংঘাত শেষ করার সুযোগটি গ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং কাতার ও মিসরকে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মহাসচিব তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন—তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সকল বন্দির তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন মুক্তি, এবং অবাধ মানবিক সহায়তার নিশ্চয়তা। জাতিসংঘ এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে সকল প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে, যাতে দুর্ভোগ রোধ করা যায় আরও বেশি। সূত্র: আল জাজিরা, ইউএন নিউজ, টাইমস অব ইসরায়েল
বিডি প্রতিদিন/এএম