ভারতের মণিপুর রাজ্য সফরে গিয়ে শান্তি স্থাপনের বার্তা দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষদের উদ্দেশে তার আহ্বান- আপনারা হিংসার পথ পরিহার করে শান্তির পথ বেছে নিন। এই পথই আগামী দিন আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করবে। ২০২৩ সালে মণিপুরে কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার ঘটনার প্রায় দুই বছর পর এই প্রথম গতকাল উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য সফরে যান প্রধানমন্ত্রী।
এ দিন প্রথমে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল বিমানবন্দরে নেমে সড়ক পথে কুকি সম্প্রদায় অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে যান তিনি। সেখানে একটি শিবিরে অবস্থানরত সহিংসতার শিকার হওয়া সব বয়সের দুর্গত মানুষদের সঙ্গে মিলিত হন, তাদের কথা বলে তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের তরফে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চুরাচাঁদপুরের পিস গ্রাউন্ডে ৭ হাজার ৩০০ কোটি রুপির বিভিন্ন প্রকল্পের শিলন্যাশও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমি সমস্ত সংগঠনকে অনুরোধ জানাব যে শান্তির পথে চলে আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করুন এবং নিজেদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করুন। আমি কথা দিচ্ছি- আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। ভারত সরকার আপনাদের সঙ্গে রয়েছে, মণিপুরের জনগণের সঙ্গে রয়েছে। মণিপুরের জনজীবনকে নতুন করে মূল স্রোতে নিয়ে আসার জন্য ভারত সরকার সর্বতোভাবে চেষ্টা করছে। যারা তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, সেসব পরিবারের জন্য ৭ হাজার নতুন ঘর তৈরির জন্য আমাদের সরকার সাহায্য করছে। এমনকি ৩ হাজার কোটি রুপির বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫০০ কোটি রুপি রয়েছে দুর্গত মানুষদের সহায়তায়। মণিপুরের উপজাতি যুব সমাজের স্বপ্ন সম্পর্কে অবগত হয়েছি, ওদের চিন্তা দূর করার জন্য আলাদা আলাদা ভাবে কাজ চলছে।
সরকারের লক্ষ্যই হলো সরকারি সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করা। গোটা দেশের প্রত্যেকটি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নতি করায় দেশের প্রথম লক্ষ্য।’ গোষ্ঠী সহিংসতার ঘটনায় মণিপুরের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা চুরাচাঁদপুরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মণিপুরের মাটি আশা এবং আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্র। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সহিংসতার ঘটনা এই সুন্দর এলাকাকে গ্রাস করেছে। কিছুক্ষণ আগেই বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করা সেসব দুর্গত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওদের সঙ্গে কথা বলার পর আমি এটা বলতে পারি যে, মণিপুরে আশা ও আকাঙ্ক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে।’ মোদির অভিমত, ‘কোনো একটি জায়গায় উন্নতির জন্য শান্তি স্থাপন খুবই জরুরি। উত্তর-পূর্ব ভারতে কয়েক দশক ধরে বিবদমান বিবাদ, সংঘর্ষ গত ১১ বছরে সমাপ্তি হয়েছে। মানুষ শান্তির পথ বেছে নিয়েছে। উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’